Saturday 31 March 2018

৪ দিন সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন মেঘালয় থেকে

এই বর্ষায় ৪ দিন সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন #মেঘালয়
ভিসা, ট্রাভেল ট্যাক্স বাদ দিয়ে নিম্নবর্ণিত হিসাব অনুযায়ী ট্যাক্সি ও হোটেল ভাড়া মাঝামাঝি ধরলে খাবার, এন্ট্রি ফি ও পার্কিং ফি সহ ৪ জনের মোট খরচ হয় ১৭,৫০০ রুপি বা জনপ্রতি -৪,৩৭৫ রুপি (তামাবিল - মেঘালয়ে ৪ দিন - তামাবিল)।
মেঘ, পাহাড়, ঝর্ণা, জলপ্রপাতের দেশ মেঘালয়। বর্ষায় এখানে উঁচু উঁচু সবুজ পাহাড়ের মাথাগুলো প্রায় সবসময়ই শুভ্র মেঘে ঢাকা থাকে। সেই সব পাহাড় থেকেই ঝরে পড়ছে অজস্র ঝর্ণা। দূর থেকে দেখলে মনে হয় গাঢ় সবুজ পাহাড়ের গায়ে কেউ যেন অজস্র সাদা রেখা এঁকে দিয়েছে। এই ঝর্ণাগুলোর জল থেকেই সৃষ্টি হয়েছে অনেকগুলো স্বচ্ছ জলের পাথুরে নদী বা খাল। যেগুলো বিশালাকার পাথরের বোল্ডারের মাঝ দিয়ে বয়ে চলতে চলতে গেয়ে চলেছে অপূর্ব সংগীত। একবার এই সংগীত ঠিকঠাকভাবে শোনা শুরু করলে মনে হয় আজীবন এখানেই রয়ে যাই। এইসব নদী বা খালের আকস্মিক পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে সেভেন সিস্টার্স ফলস্ বা নোহকালিকাই ফলস্এর মতো বিরাট আকারের জলপ্রপাতগুলো। যেগুলোর জল পতনের গর্জনে বুকে কাঁপন ধরায়। এর আশেপাশেই ছড়িয়ে আছে প্রাকৃতিক গুহা, হ্রদ, জঙ্গল। মেঘালয়ের রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে উপভোগ করা যায় মেঘের খেলা। মেঘ কখনো মাথার একটু উপর দিয়ে যাচ্ছে, কখনো ভিজিয়ে দিয়ে সাথে সাথে যাচ্ছে, কখনো রাস্তার একটু নিচ দিয়ে যাচ্ছে, আবার কখনো কয়েক পাহাড়ের মাঝের উপত্যকায় থেমে আছে। বর্ষায় মেঘালয় যেন তার সব সৌন্দর্য উজাড় করে দেয়।
মূলত ৪ জনের জন্য এই প্ল্যান।

.
.
১ম দিন : বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস বা ট্রেনে সিলেটের কদমতলী বাস স্ট্যান্ড পৌছতে হবে ভোরে। কদমতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে জাফলং / তামাবিলগামী বাসে তামাবিল জিরো পয়েন্ট। লোকাল বাস ভাড়া - ৬০ টাকা। তামাবিল জিরো পয়েন্ট থেকে ২-৩ মিনিট হেটে তামাবিল কাস্টমস, ইমিগ্রেশন।
তামাবিল কাস্টমস ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে ইন্ডিয়া প্রবেশ করে সে অংশের ডাউকি কাস্টমস, ইমিগ্রেশন। এখানের কাজ শেষ করে বেরলেই অনেক ট্যাক্সি চালক আপনাদের গন্তব্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘিরে ধরবে। ডাউকি ইমিগ্রেশনের সামনের ট্যাক্সিগুলো ভাড়া বেশি চায়। চাইলে এখান থেকেও ট্যাক্সি নিতে পারেন। ভাড়া একটু কমাতে চাইলে ১০-১৫ মিনিট হেটে সোজা রাস্তা দিয়ে চলে যান ডাউকি বাজার। ডাউকি বাজারে নাস্তা করে নিন।
এই প্ল্যান অনুযায়ী যেতে পারলে সকাল ১০-১১ টার মধ্যে ডাউকি বাজারে থাকবেন। ডাউকি বাজারে নাস্তা হিসেবে ২ পিস পরোটা + ১ বাটি চানা (বুটের ডাল) ৩০ রুপি নিবে। নাস্তা খেয়ে ট্যাক্সি বা মারুতি জীপগাড়ি রিজার্ভ করে ফেলুন। মারুতি জীপে সামনে ১ জন আর পেছনে ৩ জন বসা যায়।
ডাউকি বাজার থেকে ->
#উমক্রেম_ফলস্ ( রাস্তার পাশে) ->
#বপহিল_ফলস্ বা #বড়হিল_ফলস্ (রাস্তার পাশে, এদেশে পান্থুমাই ঝর্ণা নামে পরিচিত) ->
#নহওয়েত_লিভিং_রুট_ব্রিজ (রাস্তা থেকে একটু ভেতরে, ১০/২০ রুপি টিকেট) ->
#মাওলিনং_ভিলেজ (এশিয়ার সবথেকে পরিষ্কার গ্রাম, ২০/৩০ রুপি টিকেট) ->
#ক্রাংসুরি_ফলস্ আমলারেম (মাওলিনং ভিলেজ থেকে প্রায় ৩ ঘন্টার পথ, টিকেট ১০ রুপি,এখানে দুপুরের খাবার খাবেন) ->
#শ্নোনেংপেডেং_ভিলেজ এই পুরো পথটুকুর জন্য ট্যাক্সি রিজার্ভ করুন। ভাড়া পড়বে ১৫০০-২০০০ রুপির মধ্যে। ট্যাক্সি ভাড়া দামাদামির দক্ষতার ভিত্তিতে কম বেশি হতে পারে।
অনেক রাত পর্যন্ত এই পাহাড়ি নদীর পাথরগুলোতে বসে জল-পাথরের অপূর্ব সংগীত শুনতে পারেন। রাতে শ্নোনেংপেডেং এ কটেজে থাকা। ব্রাইট স্টার কটেজে ৪ জনের জন্য ২ বেডের এক রুম ভাড়া ১২০০-১৬০০ রুপি। চাইলে তাবুতেও থাকতে পারেন। ৪ জনের এক তাবুতে ম্যাটস, বালিশ, কম্বলসহ ৭০০ রুপি।
দুপুরের খাবার খাবেন ক্রাংসুরি ফলস, আমলারেম এ। ভাত + সবজি + চিকেন নিবে ১০০-১২০ রুপি। রাতের খাবার শ্নোনেংপেডেং কটেজে। ভাত + সবজি + চিকেন/মাছ ১০০-১২০ রুপি।
.
.
২য় দিন : ভোরে ঘুম থেকে উঠে #উমংগট_নদীতে ঘুরাঘুরি করে কাছাকাছি ২ টি ঝুলন্ত ব্রিজে উঠে দেখে কটেজে ফিরে এসে সকালের নাস্তা খেতে পারেন। খুব স্বচ্ছ এই নদীর জল। পানিতে নৌকা চললে মনে হয় নৌকা হাওয়া ভাসছে। আর ব্রিজের উপর থেকে অনেকদূর পর্যন্ত নদীটি দেখা যায়। এই ব্রিজের নিচেই ২ টি নদী এসে মিলিত হয়ে এক ধারায় প্রবাহিত হয়েছে, এই মিলনস্থলটিও খুব সুন্দর।
২ পিস রুটি + চানা + চা এর জন্য ৩০ রুপি নিবে। নাস্তা করে আবার বেরিয়ে পড়ুন। কটেজের নিচেই ঘাট থেকে ২০০ রুপি দিয়ে নৌকা রিজার্ভ করে ঘুরে আসুন নদীর উজান থেকে। সুউচ্চ সব সবুজ পাহাড়ের মাঝ দিয়ে স্বচ্ছ পানিতে ভেসে বেড়ান ২-৩ ঘন্টা। কায়াকিং, স্নোরকেলিংও করতে পারেন।
এখানেই দুপুরের খাবার সেরে নিন। ভাত + সবজি + নদীর মাছ ১০০ রুপি নিবে। দুপুরের খাবার খেয়ে আবার ট্যাক্সি রিজার্ভ করুন শ্নোনেংপেডেং থেকে চেরাপুঞ্জি (অন্য নাম সোহরা) পর্যন্ত। আগের দিনের ট্যাক্সিচালককে বললে সে এসে নিয়ে যাবে অথবা কটেজের মালিককেও বলে রাখতে পারেন। ভাড়া ১৫০০- ২০০০ রুপি। সময় লাগবে ৩ ঘন্টার মত।
সন্ধ্যার দিকে চেরাপুঞ্জি পৌছে হোটেল ঠিক করে নিন। ২ বেডের এক রুম ভাড়া পড়বে ২০০০-২৫০০ রুপি। সোহরা পুলিশক্যাম্প বা থানার কাছাকাছি কর সংরিয়া, মাস্টার পলের Gemia Hotel, 7 step এ থাকতে পারেন। #চেরাপুঞ্জি পৌছে হোটেল ঠিক করে বাজারে ঘুরাঘুরি করে অবশ্যই সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যেই বাজারের কোনো হোটেল থেকে খেয়ে নিন। সন্ধ্যা ৭ টার পর অধিকাংশ হোটেল বন্ধ করে দেয়। রাতের খাবার ভাত + সবজি + চিকেন ১০০ - ১২০ রুপি নিবে। পরেরদিনের জন্য ট্যাক্সি ঠিক করে হোটেলে ফিরে আসুন।
.
.
৩য় দিন : সকাল সকাল ট্যাক্সি ঠিক করে বেরিয়ে পড়ুন। হোটেল ম্যনেজারের রুমে ব্যাকপ্যাক রেখে শুধু ১ রাতের ভাড়া মিটিয়ে দিন। চেরাপুঞ্জি বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা তাই সকালে বৃষ্টি থাকলেও বেরিয়ে পড়ুন। হয়ত ৩-৪ কি.মি. দূরেও বৃষ্টি হচ্ছে না। আবার সারাদিন ধরেও বৃষ্টি হতে পারে। বাজার থেকে নাস্তা সেরে ফেলুন ৩০ রুপি দিয়ে।
চেরাপুঞ্জি থেকে ->
#থাংকারাং_পার্ক ( টিকেট -১০ রুপি, ট্যাক্সি পার্কিং - ৪০ রুপি) ->
#মাওসমাই_কেভ (টিকেট -২০ রুপি, পার্কিং -৪০ রুপি) ->
#মাওসমাই_ইকো_পার্ক (সেভেন সিস্টার্স ফলস্ টপ, টিকেট -১০ রুপি, পার্কিং- ২০ রুপি) ->
#সেভেন_সিস্টার্স_ফলস্_ভিউ_পয়েন্ট (টিকেট -১০ রুপি, পার্কিং -২০ রুপি) ->
#নোহকালিকাই_ফলস্ (টিকেট -১০ রুপি, পার্কিং - ২০ রুপি) ->
#লাইপাতেং_ফলস্ (টিকেট - ১০ রুপি, পার্কিং - ২০ রুপি) -> চেরাপুঞ্জি হোটেল এই পুরো পথের ট্যাক্সি রিজার্ভের ভাড়া পরবে ১২০০-১৫০০ রুপি।
পথেই কোনো হোটেল থেকে ১২০ রুপিতে দুপুরের খাবার পেয়ে যাবেন।
এইসব জায়গা ঘুরে সন্ধ্যায় হোটেল থেকে ব্যাকপ্যাক নিয়ে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং এর উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়ুন। চেরাপুঞ্জি থেকে শিলং ট্যাক্সি রিজার্ভ ১৫০০-২০০০ রুপি। সময় লাগবে আড়াই ঘন্টার মতো।
#শিলং পৌছে হোটেল ঠিক করে নিন। পুলিশ বাজারের দিকে ২ বেডের এক রুম ভাড়া পড়বে ২০০০-৩০০০ রুপি। আর একটু ভিতরে মফরান এর দিকে Godwin Hotel এ ভাড়া পড়বে ১০০০-১৫০০ রুপি। হোটেল ঠিক করে শপিং এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ুন। পুলিশ বাজারের আশেপাশেই শপিং করে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরে আসুন। রাতের খাবার ভাত + ডাল + সবজি + বিফ/চিকেন ১৫০ রুপি পড়বে।
.
.
৪র্থ দিন : সকালে উঠে নাস্তা লুচি + চানা + ডিম ভাজা ৪০ রুপি।
শিলং এর পুলিশ বাজার থেকে ->
#উমিয়াম_লেক (বারাপানি লেক নামেও পরিচিত, টিকেট-৫০ রুপি, পার্কিং-২০০ রুপি) ->
#এলিফেন্ট_ফলস্ ( টিকেট -৫০ রুপি, পার্কিং-২০০ রুপি) -> হোটেল এই পথটুকুর জন্য ট্যাক্সি রিজার্ভ নিবে ৫০০ রুপির মত।
ফিরে ১২০ রুপি দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ডাউকির উদ্দেশ্যে ট্যাক্সি রিজার্ভ নিয়ে রওনা দিন। ভাড়া ১৫০০-২০০০ রুপি। মনে রাখবেন শিলং থেকে অবশ্য অবশ্যই দুপুর ১২ টার মধ্যে ডাউকির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। কেননা বিকাল ৫ টার ভেতর ডাউকি ইমিগ্রেশন বন্ধ হয়ে যায়।
ডাউকি এসে ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে বাংলাদেশে প্রবশ করে এখানকার ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে যাওয়ার সময় বাস থেকে যেখানে নেমেছিলেন সেখান থেকে সিলেটগামী বাসে উঠে পড়ুন। ভাড়া - ৬০ টাকা। সিলেট পৌছে রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে ঢাকার বা যে অঞ্চল থেকে এসেছেন সেখানকার বাসে উঠে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌছে যান।
ডাউকি বর্ডার দিয়ে ভিসা থাকতে হবে।
আগে থেকেই ট্রাভেল ট্যাক্স রসিদ সাথে রাখুন। কারণ তামাবিলে নাও পেতে পারেন।
মেঘালয়ের শিলংএর পুলিশ বাজারের মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে টাকার মূল্য অন্যান্য বর্ডার এরিয়া থেকে কম। ডাউকিতে টাকা বা ডলার ভাঙ্গানোর জন্য কাউকে খুঁজে পাইনি।
 অবশ্যই ছাতা বা রেইনকোর্ট সাথে রাখবেন।
 প্রতিটি স্পটেই মানুষের টিকেটের পাশাপাশি ডিএসএলআর ক্যামেরার জন্য ২০-৪০ রুপির টিকেট করতে হয়।
সময় থাকলে মেঘালয়ের আরো বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন। এখানে দেখার মত জায়গা অনেক আছে।
ঐ অঞ্চলের অধিবাসীদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন।
 ২০১৭ সালের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লেখা।
দেশের ভেতর বা বাইরে যেখানেই যান না কেন যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। এমনকি থু থু ও না। দয়া করে দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো আচরণ বা কাজ বিদেশের মাটিতে করবেন না।

ঘুরে আসলাম ট্রেজার হাউজ অফ আর্ট এবং দ্যা লাস্ট হিমালায়ান কিংডম ভুটান

বিদঘুটে হর্নের শব্দহীন একটা দেশ ভুটান! শান্ত, সুনিবিড় আর কোলাহলমুক্ত! পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর, ভদ্র এবং সুসভ্য নাগরিক, স্রোতোবহা এবং স্বচ্ছ নদী আর বিশাল বিশাল সবুজ পাহাড় দেখতে চান? সাথে বোনাস হিসেবে থাকছে অসাধারণ মনুমেন্ট, স্ট্যাচু, বৈদেশিক কালচার, স্নো ধরার সুযোগ ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক কিছু!
পাহাড়ের মধ্য দিয়ে সর্পিল রাস্তা। তীব্র গতিতে বাক নিচ্ছে ড্রাইভার। হাত ফসকালেই হাজার মিটার নিচে ছিটকে পড়বে। কতো গাড়ি পাশ কাটাচ্ছে। কিন্তু কেউ হর্ন দেয় না। এতো অবাক লাগলো দেখে আমার! আমাদের দেশে হর্নের শব্দে টেকা দায়!
মানুষ জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পারাপার হতে দেখলে গাড়িগুলো অটোমেটিক থেকে যাচ্ছে, কি আশ্চর্য! কতো সভ্য ওরা! আবার মানুষ থেমে যাচ্ছে দেখে ড্রাইভাররা সংকেত দিয়ে বলছে, " তুমি যাও!"
আমরা গিয়েছি ৪ জন অফিসের কলিগ। ৫ দিন ছিলাম। প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকার মতো লেগেছে। ঘুরেছি থিম্পু, পারো এবং পুনাখা!

যেতে লাগবে কি?
- ভারতের ট্রানজিট ভিসা! ভিসা ফর্ম ফিল আপ করে এপ্লাই করেন, চৌদ্দ - পনের দিনের ভিসা পাবেন। যাওয়ার সময় ৩ দিন, এবং আসার সময় ৩ দিন চাইলে ভারত ঘুরতে পারবেন। বাসের টিকেটটা টাইম মিলিয়ে কাটবেন যাতে ভিসা পাওয়ার পরে ওই টিকেটে যেতে পারেন।
আপনি চাইলে আকাশপথেও যেতে পারেন। আমরা যখন যাই তখন টিকেট এভেইলএবল ছিলো না, একটু আগেই কাটবেন টিকেট যদি এয়ারে যেতে চান! ওখানে গেলে অন এরাইভাল ভিসা দিয়ে দিবে।

আমি ২১ তারিখ রাতে শ্যামলী পরিবহনে রওয়ানা দেই। বহুকষ্টে অফিস থেকে দুইদিন ছুটি নেই, তারসাথে ৩ দিন টানা ছুটি মিলিয়ে ৫ দিনের প্ল্যান নিয়ে যাত্রা শুরু করি।
কল্যাণপুর - বুড়িমারি ; যাত্রা বাসে ; সময় লাগবে প্রায় ১০/১১ ঘন্টা, টিকেটের দাম নিবে ১৩০০-১৫০০ টাকা।
ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়া লাগবে ৫৫০ টাকা। এটা বাসেই দিয়ে দিবেন, তাহলে ওরাই প্রসেস করে দিবে আপনার পাসপোর্ট।
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন অফিসে যাবেন তারপর। ওখানে গিয়ে ছবি তোলা লাগবে। আপনি চাকুরীজীবী হলে অবশ্যই NOC লেটার নিয়ে যাবেন। তারপর বাংলাদেশি কাস্টমস ক্রস করে ইন্ডিয়ান কাস্টমস ক্রস করবেন। তারপর ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশনে প্রসেসিং করবেন। এখানে ১০০ রুপি দালালকে দিলে কাজ ত্বরান্বিত হবে। পাসপোর্ট এর কাজ শেষ হলে টাকা এবং ডলার ভাংগায় ইন্ডিয়ান রুপি করে নিবেন। ভুটানে সবজায়গায় রুপি চলে। এখন আপনি ওয়েস্ট বেংগলের চ্যাংরাবান্ধায় আছেন।
চ্যাংরাবান্ধা - জয়গাও; যাত্রা মিনি মাইক্রোতে ; সময় লাগবে ৩/৪ ঘন্টার মতো ; ভাড়া লাগবে ১৪০০-১৭০০ রুপি, ৬ জন বসতে পারবেন অনায়াসে।

জয়গাও হলো ভারত-ভুটান বর্ডার। ভারতে হলো জয়গাও আর ভুটানে হলো ফুন্টসোলিং। ভারত-ভুটান ওপেন বর্ডার। কোন হ্যাসেল নাই। ভারত ইমিগ্রশন অফিসে গেলেই আপনার পাসপোর্ট এ সীল মেরে দিবে। তারপর হেটে ভুটানে ঢুকে পড়বেন এবং ভুটান ইমিগ্রেশন থেকে পারমিট নিয়ে নিবেন। ভারতের এলাকাটা নোংরা, কোলাহলপূর্ণ। ফুণ্টসোলিং ঢুকলেই আপনার মনে হবে অন্য এক দুনিয়ায় চলে আসছেন। সবকিছু নিয়ম মেনে চলছে। শান্ত, কোলাহলপূর্ণ এবং কোথাও কোন ধূলোময়লা নেই। মীনা কার্টুনের ভাষায় বলতে গেলে, " এ আমি কই আইলাম! "

ফুন্টসোলিং থেকে থিম্পু যেতে ৫/৬ ঘন্টা লাগে, বাহন ট্যাক্সি। ভাড়া লাগবে ২৫০০-৩০০০ রুপি। ৪ জন বসতে পারবেন। এখান থেকে বাসও যায়। তবে বাস সবসময় ছাড়ে না এবং পরিমাণে কম। আমরা ট্যাক্সি দিয়ে গিয়েছিলাম থিম্পু।
ফুন্টসোলিং থেকে থিম্পুর রাস্তায় পাবেন আসল ভুটানের স্বাদ! নৈসর্গিক দৃশ্য! এই জার্নির কথা কোনদিনও ভুলবো না। আহা! পাহাড়ের প্রতিটা বাক এখনো ভুলতে পারি না। প্রতিটা বাকে বাকে সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য!

শীতের ব্যাপারে কিছু কথা। ফুন্টসোলিং থেকে রাস্তা ধরে যতো থিম্পুর দিকে যাবেন তাপমাত্রা ততই কমবে। অবশ্যই অবশ্যই শীতের পোষাক নিবেন। আমরা রাত ১১:৩০ এ থিম্পু পৌঁছাই। গাড়ি থেকে বের হয়েই দাত কপাটি লেগে যাবার জোগাড়, এত্তো ঠান্ডা। শূন্য ডিগ্রী, হিমাংকের নিচে চলে যায় যায় অবস্থা। থার্মাল ইনার, আপার কিনে নিয়েছিলাম বংগবাজার থেকে, ওটা অনেক কাজে দিয়েছে। অবশ্যই কিনে নিবেন!

আমরা থিম্পুতে ছিলাম হোটেল টাক্টসাং এ! তারপর পারোতে গিয়ে ছিলাম হোটেল পারোতে। ফুন্টসোলিং এ ছিলাম হোটেল হ্যাভেন ইনে। ভালোই ছিলো হোটেলগুলো। ৪ জনের স্ট্যান্ডার্ড রুমে ভাড়া পড়বে ১২০০-১৫০০ রুপি। যতো আগে বুক দিবেন তত কমদামে রুম পাবেন। রুমে টিভি, এসি, হিটার, গিজার পাবে এই রেটের মধ্যই। এর মধ্য কিছু ফ্যাসিলিটি কম নিলে আরো কম দামে রুম পাবেন। অনলাইম থেকে নাম্বার নিয়ে ডিরেক্ট কল দিয়ে হোটেল বুক করে ফেলবেন।
খাবার নিয়ে কিছু কথা বলি। সত্যি বলতে গিয়ে আমার খেতে কষ্ট হয়েছে। আমি ভেজিটেবল একেবারেই পছন্দ করি না। ওখানে ভেজিটেবল মোটামুটি ভালো আছে। ইন্ডিয়ান নন ভেজ রেস্টুরেন্টগুলোতে গেলে রাইস, চিকেন, মাটন সবই পাবেন। ইন্ডিয়ান ট্রাডিশনাল আইটেমগুলোও ওখানে পাবেন। ঘুরতে গেলে খাবার নিয়ে এতো চিন্তা না করাই উত্তম। প্রতিবেলার খাওয়াদাওয়া ১০০-১৫০ রুপির মধ্য করতে পারবেন। ওদের স্ট্রিটফুডগুলোও ভালো, ট্রাই করবেন
ঘুরতে যাবার জন্য ট্যাক্সি বেস্ট। প্রতিদিন ভাড়া এরাউন্ড ২০০০-৩০০০ রুপি। দরদাম করে নিবেন।

খুব প্রাণোচ্ছল আর সাহায্যকারী মানুষ ভুটানিজরা! আপনি যা জানতে চাইবেন তা জানানোর পরেও ওরা আপনাকে ছাড়বে না, আপনার যা জানা দরকার সব বলে দিবে। এতোই হেল্পফুল ভুটানিজরা। খুব বেশি করে মনে থাকবে চেলালা পাসের স্নো ধরার এবং দেখার স্মৃতি! আরো মনে থাকবে সাসপেনশন ব্রিজ, বুদ্ধের বিশাল স্ট্যাচু, মোচু নদীতে র‍্যাফটিং এবং ভুটানিজদের আতিথেয়তা!

Tuesday 20 March 2018

নকশিপল্লী, পূর্বাচল

যারা ঢাকার মধ্যেই যানজটের থেকে দূরে গিয়ে একটু শান্তির আভাস পেতে চান তাদের জন্য একটা ভাল জায়গা হতে পারে পূর্বাচলের বালু ব্রিজের পাশের এই সুন্দর এলাকা.. এখানে মোটামুটি অনেক খাওয়ার হোটেল, রেস্তোরা আছে কিন্তু আমার দেখা মতে একটু ভিন্ন ধাচের একটা রেস্তোরা হল "নকশিপল্লী"... আপনি এখানে নদীর পাশে বসে কিছুটা সুন্দর সময় কাটাতে পারেন.. ইচ্ছে করলে বোটে ঘুরতে পারেন.. এমনকি ঘোড়ার গাড়িতে চড়তে পারবেন!!! আর আশে পাশে হাটার অনেক জায়গা আছে.. চারপাশের কাশফুল গুলো যখন এক দল বেধে উড়ে আসবে তখন পরিবেশ হবে আরো রোমাঞ্চকর..

কিভাবে যাবেন:
ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে আগে আপনাকে ৩০০ ফুটে আসতে হবে..আপনি চাইলে নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন.. ৩০০ ফুট থেকে পূর্বাচল যাওয়ার পথে ২টা ব্রিজ পরছে.. প্রথমে পড়বে বোয়ালিয়া ব্রিজ তারপরে পড়বে বালু ব্রিজ.. বালু ব্রিজ পার হয় ডানে টার্ন নিতে হবে ওখানে দেখবেন লেখা আছে ভোলানাথপুর কবরস্থান.. এই ভিতরের পথ ধরেই চলে যাবেন.. আর যাদের গাড়ি নেই ৩০০ ফুটে এসে এখান থেকে অটোতে আপনাকে যেতে হবে "বালু ব্রিজ" প্রতিজনের অটোভাড়া নিবে ৩০ টাকা. অটো থেকে নেমে ভিতরে ১০-১৫ মিনিট হাটলেই পেয়ে যাবেন "নকশিপল্লী"

কম খরচে সুন্দরবন ভ্রমন

সুন্দরবন ভ্রমন : ব্যক্তিগত সুখস্মৃতি ও একজন গাইডের পাঁচালী।
নতুন বছরের প্রথম দিনটিকে টার্গেট করে চারমাস আগ থেকেই খোঁজখবর করছিলাম কিভাব সুন্দরবন যাব, কাদের সাথে যাব এসব। ToB Helpline এর সুবাদে মংলার স্থানীয় এক ভদ্রলোকের সাথে কথা হলো, এনশিওর করলেন আমাদের ট্যুরের সব আয়োজন করে দিবেন বলে। কিন্তু নির্ধারিত তারিখের দিনকয়েক আগে জানালেন কেবল আমাদের বার জনের জন্য ব্যবহার উপযোগী তার লঞ্চটি আদারওয়াইজ ভাড়া হয়ে গেছে। অনুরোধ করলেন আমাদের ডেট পেছাতে। সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিলাম তাকে। কিন্তু সংগত কারনেই মন খারাপ হলো।

ToB Helpline এর সাহায্য নিয়ে আবার খোঁজাখুঁজি। ঢাকাস্থ এক ট্যুর অপারেটর এর সাথে কথা হলো। এনশিওর করলেন তিনিও। শর্ত এবং চাহিদা মোতাবেক ৫০% অর্থ অগ্রিম পে করে দেই। কিন্তু জার্নি শুরুর তিন/চারদিন আগে অনুরোধ করলেন অবশিষ্ট অর্থও পে করে দিতে, ভালো লাগেনি যেটা। লজিক্যালও মনে হয়নি। এরপর বারজনের জাহাজ নষ্ট হয়ে গেছে জানিয়ে অনুরোধ করলেন বড় একটি গ্রুপের সাথে বড় লঞ্চে যেতে। না করায় অগত্যা রাজি হলেন বিকল্প ব্যবস্থা করতে। মন খারাপ হলো আবারো।
নির্ধারিত দিনে চট্টগ্রাম থেকে আমরা যাত্রা শুরু করি। হানিফ পরিবহন, সৌদিয়া এবং ঈগল পরিবহন চট্টগ্রাম- খুলনা রুটে নিয়মিত যাতায়াত করে। সচারচর এ গাড়িগুলো মংলা পর্যন্ত যায় না বলে মংলা থেকে বত্রিশ কিমি দূরে কাটাখালী নামক পয়েন্টে নেমে যাওয়াটাই সুবিধাজনক। তাই করি আমরা। সেখান থেকে ১,৫০০.০০ টাকায় মাইক্রোবাস ভাড়া করে মংলা পৌছাই ঘড়ির কাটা ধরে প্লান মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের পনর মিনিট পর। আলহামদুলিল্লাহ্‌।

জনাব মোঃ কায়সুজ্জামান পিকলু, (Piqlu Zaman) ২৮/৩০ বছরের টগবগে এক যুবক, ট্যুর অপারেটর যাকে আমাদের গাইড হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন আগের দিন রাতে, অপেক্ষা করে ছিলেন বাস স্টান্ডেই। প্রাথমিকভাবে পরিচিত হলাম, কথা হলো টুকটাক। প্রথম পরিচয়েই মনে হলো অসম্ভব আন্তরিক এবং ডেডিকেটেড। তার কাছেই জানলাম, আমাদের ট্যুর অপারেটর মাথাপিছু টাকার একটা অংশ রেখে আমাদেরকে এই গাইড তথা অপারেটর এর কাছে হ্যান্ডওভার করে দিয়েছেন। সবকিছু গুছিয়ে আনার দায়দায়িত্বটা তারই। অর্থাৎ একপ্রকার বিক্রি হয়ে গেছি। অবশ্য এতে ভালোই হয়েছে।
লঞ্চে উঠে পিকলু আমাদের তিন দিন আর দুই রাতের ওভারঅল ট্যুর প্লান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা দিলেন। আমরা চলতে শুরু করলাম পশুর নদির বুক চিড়ে। ফ্রেশ হয়ে বসলাম নাস্তার টেবিলে।

ট্যুর অপারেটর যেমনটা বলেছিলেন, ঠিক সেভাবেই ম্যানু ধরে লঞ্চে খাবার সার্ভ করা হয়েছে সময় ধরে। সাদা ভাত, ভর্তা, ডিম, খিচুড়ি, পোলাও, রুপচাদা, রুই এর সাথে খুলনার বিখ্যাত ফাইস্যা মাছ, গরু, দেশী মুরগি, কবুতর, বারবিকিউ, ফ্রুটস, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রতিবেলায়ই খাবার ছিলো পরিমানে অত্যধিক আর স্বাদে অতুলনীয়। দশ/ বার বছরের অভিজ্ঞ পাঁচক আংকেল হাসিমুখে সবটুকু আন্তরিকতা দিয়েই তার কাজটি করে গেছেন নিষ্ঠার সাথে।

প্লান অনুযায়ী হাড়বাড়িয়া, কটকা, টাইগার পয়েন্ট, জামতলী সী বীচ, দুবলার চর এবং করমজল হয়ে আমরা মংলা ফেরত আসি। লঞ্চের আকার ও সমুদ্রস্রোত বিবেচনায় নিয়ে হিরনপয়েন্ট যাওয়া বাদ দিতে হয়েছে। শুরু থেকে শেষ, লঞ্চে ষাট ঘন্টার জার্নিতে সবটা সময়েই আমরা আমাদের গাইডকে পেয়েছি বন্ধুর মতো, ভীষন কেয়ারিং হিসেবে। কখন কি করতে হবে, কোন ধরনের ড্রেসআপ কমফোর্টেবল হবে, কিভাবে পথ চলতে হবে, বন্য পশু প্রানীর দেখা পেলে কী করতে হবে সব কিছু আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন ছাত্র পড়ানোর মতো করে। কথা প্রসংগে বলছিলেন, কেবল পেশা নয় বরং সুন্দরবন তার জন্য একটি আবেগের জায়গাও। আমাদের এক গ্রুপমেইড সবার অগোচরে তাকে হরিনের মাংস ম্যানেজ করা যায় কিনা বললে স্পষ্টতই না করেছেন। বলেছেন, আমাদের কারো কারো শখের কারনে বাঘের মতো হরিনটাও বিলুপ্ত হতে শুরু করলে এ বনের অবশিষ্ট থাকবে কী! ইস! সবার যদি এই বোধটুকু হতো! একজন পিকলুর জন্য আমাদের ট্যুরকালীন সময়টা নি:সন্দেহে সুখকর হয়েছে অনেক। প্রথম দিকের মন খারাপ করাটা উবে গিয়ে কেবল আনন্দঘন সময়ই কাটিয়েছি আমরা।
পৃথিবীখ্যাত সুন্দরবন, আমাদের দেশটির জন্য সৃষ্টিকর্তার রহমতস্বরুপ এ বনের সৌন্দর্য আর বিশালতা, বনকেন্দ্রিক নৈসর্গিক শোভা আর আমাদের মুগ্ধতা বিষ্ময় জাগানিয়া সুখস্মৃতি কেবল এখন। খুব কাছ থেকে দেখে প্রকৃতঅর্থেই প্রেমে পড়ে গেছি এই বনের,আমাদের গর্বের ধনের।
অপেক্ষাকৃতভাবে, বনে ঘুরার স্পটগুলোকে অনেক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন মনে হয়েছে আমার। তবুও অধিকতর সতর্কতা প্রয়োজন। এখানে সেখানে এটা সেটা না ফেলে, বনের গাছপালার ডাল না ভেংগে, উচ্চস্বরে শব্দ করে পশুপাখিদের স্বাভাবিক লাইফে ডিস্টার্ব না করে আমরা প্রমান দিতে পারি একজন সত্যিকারের পর্যটনপ্রেমী হিসেবে, প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবে। এটা মহানুভবতা নয়, বরং দায় আমাদের, আমাদের দায়িত্ব।

ঘুরে আসুন মহেরা জমিদার বাড়ী ও যমুনার পাড় বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাশ

আগেই বলে রাখি পোস্টটা অনেক বড় আর যাওয়া-আসার সকল খুঁটিনাটি লেখা , কারো ওদিকে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে অবশ্যই পুরোটা পড়বেন ।
* গ্রুপের পোস্ট দেখতে দেখতে আর সইলো না , সকালে এই ২ টি প্লেস কভার দেয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে দিলাম । আমার মনে হয় বাংলাদেশে এর থেকে সুন্দর-পরিপাটি জমিদার বাড়ি ও জাদুঘর আর দ্বিতীয়টি নেই । এলাকাটিতে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার অবস্থিত তাই তাদের তত্বাবধায়নে রয়েছে পুরো এরিয়াটি । ফুলের বাগান,বসার স্থান,শিশুদের পার্ক,ছোটখাটো চিড়িয়াখানা ও সংস্কারকৃত বাড়িগুলো এর আকর্ষন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে । প্রতিটি যায়গায় পুলিশ পাহারায় থাকে, তাই সবকিছু যেমন গোছালো,তেমনি পরিস্কার । ছবি তোলার জন্যে লনে ঝাড়ফুক না দিয়ে বসে পড়লেও চলে বলা যায় 
জমিদার বাড়ি দেখা শেষে সেখান থেকে চলে যাই যমুনা ব্রীজ দেখতে । যদিও চেয়েছিলাম বিকালের দৃশ্য উপভোগ করতে,কিন্তু কারনবশত আমাদের যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে যায়,ওইদিকে রিসোর্টের গেটও বন্ধ । পরে ভ্যানচালক আমাদের নিয়ে যায় একেবারে শেষ মাথায় , ওখান থেকে হাটতে হাটতে নদীর কিনারে চলে যাই,আর ধরা পড়ে এই দৃশ্য,যদিও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা,তবুও একটু ভয় লাগে কারন অন্ধকার পুরো,আর আশেপাশে আমরা ২ বন্ধু ছাড়া কেউ নেই । সেখান থেকে বেড়িয়ে আবার চলে আসি রেলস্টেশনে,সেখান থেকে ট্রেনে চড়ে ঢাকা । আসুন বলি কিভাবে যাওয়া যাবে,খরচ কেমন হবে - 

প্রথমে মহেরা গেলে-
১, মহাখালী থেকে টাঙ্গাইল এর বাস আছে ( নিরালা,ধলেশ্বরী) নিরালায় ভাড়া ১৫০ টাকার মত, আমরা মহাখালী নেমেই ধলেশ্বরী পাই,আর প্রথম কাস্টমার হওয়ায় আমাদের থেকে ৯০ টাকা করে ভাড়া নেয় । কল্যানপুর-গাবতলী থেকে এসি বাসও আছে, ২৫০ টাকা ভাড়া ( সকাল-সন্ধ্যা,সোনিয়া)
২. এছাড়া আবদুল্লাহপুর চলে যান,সেখান থেকেও যেকোন উত্তরবঙ্গের গাড়ীতে চড়ে বসুন ,ভাড়া ১০০-২০০ নিতে পারে যদি বাসে উঠায় আর বাসের অপারেটর ভেদে ।
৩. মতিঝিল থেকে ওয়েলকাম,সাইনবোর্ড থেকে ঠিকানা,মিরপুর থেকে ইতিহাস ইত্যাদি বাসে করে চন্দ্রা চলে আসুন,এখান থেকে টাঙ্গাইলগামী বাসে উঠুন,৫০ টাকা নিবে । বলে রাখি,যেই বাস মহাখালী/আবদুল্লাহপুর এ পাবেন,সেই বাসই চন্দ্রা থেকে পাবেন 
বাসে তো উঠলেন এবার হেলপার/সুপারভাইজার কে বলে রাখেন মহেরা পুলিশ লাইন যাবেন । আপনার যাত্রাপথে হাতের ডানপাশে পড়বে,সেখানে তারা নামিয়ে দিবে,নেমে রাস্তা পার হয়ে ১৫ টাকা করে শেয়ার সিএনজি তে মহেরা ।
ভিতরে প্রবেশের জন্যে টিকেট ৫০ টাকা । তাদের খাবারের ব্যবস্থা আছে, টিকেট কাউন্টার থেকেই খাবারের মেনু সম্বলিত কাগজ দিয়ে দেবে, ১২ টার মধ্যে অর্ডার করে ফেলবেন অবশ্যই । তাছাড়া শুকনো খাবারও পাওয়া যায় ।

মহেরা টু বঙ্গবন্ধু সেতু -
মহেরা থেকে বেড়িয়ে রিকশা থাকলে রিকশা নেন,অথবা সিএনজি কে বলুন নাটিয়াপাড়া যাবেন,ওটা হলো বাসের স্টপেজ,কোন না কোন বাস থামাবেই । রিকশা রিসার্ভে ৬০ টাকা নিবে,সিএনজিতে ২০/২৫ নিতে পারে ।
ওখানে নেমে এবার টাঙ্গাইল বাদে যেকোন বাস আসলে হাত ইশারা করুন,বাসের দয়া হলে থামাবে,আর যাত্রী নেয়ার জন্য উৎসুক থাকলে আপনারেই টানাটানি করবে । যাইহোক আমাদের কপালে দয়ার বাসই পড়ে,হাত দেখানোর পর একটু দূরে থামায়,দৌড়ে বাসে উঠে পড়ি । বাসে ওঠার আগে জিজ্ঞেস করে নিবেন ব্রীজের এইপাড় নামবেন,ভাড়া কত । ১৫০/২০০ চাইবে,ভয় পাবেন না । ১০০ বলে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকুন,আপনাকে নেবেই । এছাড়া টাঙ্গাইল পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে ব্রীজের এইপাড় যেতে পারেন,সেক্ষেত্রে ৪০/৫০ টাকা লাগবে,কিন্তু লোকাল হওয়ায় সময় লাগবে বেশী । আমরা ২ জনে ১৫০ টাকা দেই ভাড়া,আর পৌছাতে ৪০/৫০ মিনিট লাগে,তাও বাসের স্পিড ছিল ৮০ kmph

বাসের হেলপার/সুপারভাইজার কে বলে রাখুন রিসোর্ট এ যাবেন,তারা আপনাকে ব্রীজের আগে গোল চত্বরে নামিয়ে দিবে । নেমে ভ্যানে চড়ে ১০ টাকা দিয়ে চলে যান পার্কের ভিতর,বলে নিয়েন ব্রীজ দেখতে যাবেন । ওখানে ঘোরাঘুরি শেষে ভ্যান নিয়ে রেলস্টেশন চলে যান,ঢাকাগামী ট্রেন এ চলে আসুন । আমাদের জন্যে একটাই ট্রেন ছিল, ৭ঃ৩০ টায় , ১৩৫ টাকা ভাড়া ,সিট সব বুক আগে থেকেই। এত রাস্তা তো দাড়িয়ে আসা যায়না তাই শীতে কাঁপতে কাঁপতে দরজায় বসে ঢাকা চলে আসি , হয়ত হাত পায়ের তাপমাত্রা মাইনাস এ নেমে গিয়েছিল 
আমাদের খরচ ছিল এরকম (একজন এর খরচ লিখলাম) - বাসা-মহাখালী (২০)+ টাঙ্গাইল বাস (৯০)+মহেরা সিএনজি(১৫)+টিকেট(৫০)+মেইন রোড পর্যন্ত রিকশা (৬০)+ যমুনা পর্যন্ত বাস(৭৫)+যমুনার পাড় ভ্যানে যেতে(২০)+রেলস্টেশন আসতে(৩০)+ট্রেনে ঢাকা(১৩৫) = ৪৯৫ টাকা । ট্রেন বাসার কাছে ব্রেক দেয়ায় বাসায় আসতে ভাড়া লাগেনি 
আপনারা যা করবেন -
* অবশ্যই খুব সকালে রওয়ানা দিবেন , ৬ঃ৩০ টার মধ্যে,এতে করে রাস্তায় হালকা জ্যাম থাকলেও মহেরা ১১ টার মধ্যে পৌছাবেন । যাওয়ার জন্যে ট্রেনও আছে,কিন্তু গতকাল ( সোমবার ) সকাল ৮ টার ট্রেনের অফডে ছিল যার জন্যে বাসে যাওয়া লাগে । ট্রেন শিডিউল লাগলে কমেন্টে বলবেন,দিয়ে দিবো । ট্রেনে ঢাকা থেকে গেলে মির্জাপুর নেমে মেইন রোডে এসে মহেরা যাবেন,আর টাঙ্গাইল নামলে সেখান থেকে গাজীপুর/চন্দ্রা/ঢাকাগামী বাসে উঠে মহেরা নামবেন । ওটা আমার মনে ঝামেলাপূর্ন ।
* ছবি তোলেন,ঘোরাঘুরি করেন,খাবার গ্রহন করেন সমস্যা নেই ।মহেরা থেকে ২ টার মধ্যে বের হয়ে যান। কারন মেইন রাস্তায় গেলে বাস কোনটা পাবেন,আর কখন পাবেন গ্যারান্টি নেই। আমরা ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলাম ।
* বাস এ রেলস্টেশনেই নেমে যান,আর খোঁজ নিন ঢাকাগামী ট্রেন কখন কখন আছে । আমরা ৬ঃ৩০ এ একটা ট্রেন ছিল বলে জানতাম,ঘোরাঘুরির পর কাউন্টারে গিয়ে দেখি একটাই ট্রেন আছে,৭ঃ৩০ টায় । ট্রেনের খবর নিয়ে গেলে কতক্ষন ঘুরতে পারবেন তার আন্দাজ হবে । ট্রেন স্টেশন থেকেও ভ্যানে রিসোর্টে যেতে পারেন ।
* যদি সেখান থেকে বাসে আসতে চান তাহলে ডাইরেক্ট বাস সহজে পাবেন না । এর জন্যে প্রথমে লেগুনাতে এলেঙ্গা,এরপর সেখানে বাস ঢাকাগামী বাস । 

* পোস্ট পড়ে বেশী টেনশনে পড়ে গেলে গাড়ীভাড়া করে চলে যান , বড় গ্রুপ গেলে খরচ পুষিয়ে যাবে।
আর হ্যা ভাই/বোন । অবশ্যই মহেরা ও যমুনার পাড় কোনটাই ময়লা/আবর্জনা ফেলে অপরিস্কার করবেন না । মহেরা পুলিশের এরিয়া , আর যমুনার তীর আর্মি এরিয়া । অপরিস্কার করবেন তো জরিমানাও দিতে হবে:

কম খরচে ভ্রমন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন কক্সবাজার

দেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটা জিজ্ঞেস করলে চোখ বন্ধ করে বলবো সেন্ট মার্টিন। প্রতি বছরে যাওয়া হয় তাও খায়েস মিটে না। যাইহোক, এবার সেন্ট মার্টিন ঘুরেছিলাম একটু অন্যভাবে। সাধারনত যারা সেন্ট মার্টিন যায় বেশিরভাগই জেটি, বাজার, বীচ আর বোটে করে ছেঁড়া দ্বীপ ঘুরে আসে। সেন্টমার্টিনের ভিতরে বা চারপাশে খুব একটা ঘুরা হয় না।
.
তাই এবার গিয়েছি সেন্ট মার্টিনের ভিতর দিয়ে ভ্যানে করে ছেঁড়াদ্বীপ। ভ্যানে করে যাব শুনে অনেকেই ভ্যাটকাচ্ছিল, কিন্তু রুবেল নামে এক ভ্যান চালক বলল অন্যের কথায় কান দিয়া কাম নাই, চলেন নিয়া যাই। উনি নিয়ে যাবেন। দুই তিন ঘন্টা থাকবেন আবার নিয়ে আসবেন। ৫০০টাকায় ঠিক করলাম।
.




যেতেযেতে অনেক কিছুই দেখা হল যা গত কয়েকবার সেন্টমার্টিন যেয়েও দেখা হয় নি। সেন্ট মার্টিনের মাঝখান দিয়ে কিছু পাকা কিছু কাচা রাস্তা পার করে দ্বীপের একেবারে প্রায় শেষ দিকে চলে গেলাম ভ্যানে করে । এরপর আসলেই আর যাওয়ার মত অবস্থা নাই, কারন বালিগুলো খুবই নরম। চাকা ডেবে যায়।( মাঝে কিছু রাস্তা নামার লাগছে নরম বালি বলে, দুই এক মিনিট হেঁটে আবার ভ্যানে)
এরপর ১০-২০ মিনিট হাটলেই ছেঁড়া দ্বীপ। হাটার স্পিডের উপর নির্ভর করবে কত সময় লাগবে, এলবামে সিরিয়ালি দেয়া আছে, ছবি দেখলেই বুঝবেন।

.
আমরা আর ভ্যানে করে ফিরি নি, পশ্চিম বিচ দিয়ে হেঁটে এসেছি। সাধারনত এদিক দিয়ে মানুষজন/পর্যটক খুব একটা যাওয়া আসা করে না। যারা সাইকেল নিয়ে আসে পুরো দ্বীপ ঘুরবে বলে তারাও এখনে সব জায়গায় দিয়ে যেতে পারে না কারন নরম বালি আর পাথর। তবে কষ্ট করে হেঁটে যেতে পারলে দেখার মত অনেক কিছুই আছে। কিছু জায়গা আছে খুবই নির্জন। যতদূর চোখ যায় কাউকে দেখা যায় না। সময় নিয়ে গেলে একবার এভাবে পুরো দ্বীপটা ঘুরে দেখতে পারেন। যারা দেখেননি তাদের নতুন এক্সপেরিয়ান্স হবে। আর বর্ষাকালে ঘুরতে পারলে আরো জোস তবে রিস্কি। 

.
এবার কিছু ফ্রি ইনফরমেশন দেই।
বাসঃ নন এসি বাস ঢাকা থেকে টেকনাফ ৯০০ এসি ১৭৫০। তবে টিকেট কাটার আগে অনলাইনে দেখে নিয়েন টিকেটের কি হাল। যদি দেখেন বাসের সিট বেশিরভাগে খালি তাহলে এসি বাসে দামাদামি করে কমাতে পারবেন। আমরা ১৭৫০ টাকার এসি বাসে ১৩০০টাকা দিয়ে গিয়েছিলাম 
.
শীপঃ যদি ভাল ভিউ চান তাহলে কেয়ারী সিন্দাবাদের ওপেন ডেক, যদি তাড়াতাড়ি যেতে চান তাহলে গ্রীন লাইন, যদি টেবিলে বসে খাইতে খাইতে যেতে চান তাহলে কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন। ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৪০০
.
হোটেলঃ যদি নিরিবিলি জায়গায় থাকতে চান তাহলে পশ্চিম দিকের রিসোর্টগুলোতে থাকতে পারেন। সাইয়রী, কিংশুক, লাবিব এগুলো ভালই। তবে দোকানপাট অনেক দূরে। যদি অনেক পোলাপাইন সহ কমদামে জেটির কাছে ভাল হোটেল চান তাহলে ব্লু মেরিনের কুটির নিতে পারেন। ১০বেড ৩০০০/-। আর যদি বাজার, জেটি, প্লাস বারান্দা থেকে সরাসরি সাগর দেখতে চান তাহলে প্রিন্স হ্যাভেনে উঠতে পারে। এর মত ভিউ অন্য কোন হোটেলে নাই তবে সরি টু সে ভিতরে যাচ্ছে তাই অবস্থা। ২৫০০-৩০০০ দিয়ে এমন হোটেলে আসলে পোষায় না শুধু ভিউ ছাড়া।
এছাড়াও বাজারের মধ্যে ৫০০-৬০০টাকাতেও অনেক হোটেল আছে দামাদামি করে নিতে পারেন।
.ভ্যানঃ জাহাজ আসলে ১০০টাকা আর জাহাজ চলে গেলে ২০টাকা হয় ভ্যানের ভাড়া। ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ভ্যানে চইড়া হুদা টাকা খরছ না করাই ভাল।
.
গলাচিপা জায়গাটা সুন্দর। জেটি থেকে আধাঘন্টা হাটলেই পেয়ে যাবেন। এখানে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দুই পাশের বীচ দেখা যায়।
.
খাবারঃ সেন্টমার্টিনে সব জায়গায় খাবার একি। মোটা চালের ভাত, ডাল, মাছ। সব মাছ রান্নার প্রসেসও একি। হলুদ, মরিচ, লবন দিয়ে কড়কড়া ভাজি। ভাত ডাল আনলিমিটেড আর মাছ অনুযায়ী দাম আপডাউন করে। ১০০-১৫০ এর মধ্যে চাইলে দুপুর/রাতের খাবার খেতে পারেন। আর সকালে নাস্তা ৫০-৬০ টাকায় হয়ে যাবে
.
এবার সবচেয়ে সাশ্রয়ী সাজেশন।পারত পক্ষে বন্ধের দিনে যাইয়েন না। ছুটি নিয়ে সাপ্তাহের মাঝে যান। সবকিছু অর্ধেকের চেয়েও কম দামে পাবেন প্লাস জায়গাটাও নিরিবিলি পাবেন।
.
লাস্ট, সেন্টমার্টিনে ময়লা ফেলার কোন নির্দিষ্ট জায়গা দেখি নি, এরমানে এইনা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে দিবেন। প্লাস্টিক প্যাকেট, পানির বোতলের কাজ শেষ হলে প্রয়োজনে হাতে/ব্যাগে রাখবেন, হোটেলে এসে ময়লার ঝুড়িতে ফেলবেন। নাহয়লে কয়দিন পরে আর প্রবাল দ্বীপ না, ময়লার দ্বীপ ভ্রমনে যেতে হবে।

Monday 19 March 2018

কম খরচে ঘুরে আসুন সপ্নের কাশ্মির ও লেহ-লাদাখ ভারত ভ্রমন

স্বভাবগত ভাবেই এই জগতের সকল মানুস স্বপ্ন প্রিয়। নানান মানুষের বাহারি রকমের স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে আজ সবার সামনে হাজির হয়েছি এমনি এক ট্যুর প্ল্যান নিয়ে। এই অধমের সল্প জ্ঞান ও অতি সামান্য অভিজ্ঞতার আলোকে এটি সাজানো হয়েছে। একটু মনযোগ দিয়ে পরবেন। আশা করি অনেকেই উপকৃত হবেন।


আপনারা হয়ত সবাই জানেন যে, Darjeeling, Kalimpong, Peling, Simla, Manali, Leh-Ladakh, Kargil, Kashmir পৃথিবীর বিখ্যাত ও সর্ব বৃহৎ Himalayan Mountains এর এক একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ যা কিনা ভারতবর্ষে বিরাজমান। তাই আপনি চাইলেই যেকোনো পথে কাশ্মির ও লেহ-লাদাখ যেতে পারেন। কিন্তু আমার মতে নিম্ন পথগুলি বেছে নেয়াটাই উত্তমঃ
রুট-১ ঢাকা-কালকাতা-দিল্লি-লেহ লাদাখ-কারগিল-কাশ্মির
রুট-২ ঢাকা-কালকাতা-দিল্লি-শ্রীনগর-কারগিল-লেহ লাদাখ
রুট-৩ ঢাকা-কালকাতা-দিল্লি-মানালি-লেহ লাদাখ-কারগিল-কাশ্মির
উপরিউক্ত রুটগুলর আলোকে আমার লেখনিকে সাজিয়েছি ৯টি পর্বে। এখানে বলে রাখা ভালো যে, সবার budget এক না। টাই খরচের টুকিটাকি স্কিপ করে গেলাম। যারা যারা জানতে ইচ্ছুক কমেন্ট করে জানাবেন।
আজ শুধু রুট-১ পর্ব ১ নিয়েই লিখব। আপনাদের ভাল/খারাপ যাই লাগুক দয়া করে জানাবেন। আপনাদের response এর প্রেক্ষিতে পরের গুলো নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
প্রথমে ঢাকা থেকে কলকাতা চলে যান বাই বাস(এসি/নন এসি)/ট্রেন/এয়ার। সেখান থেকে দিল্লি বাই এয়ার অথবা ট্রেনে যাওয়াটাই ভাল। আপনি যদি কলকাতা বাই এয়ার এ যান তবে চেষ্টা করবেন দিনের শেষ ফ্লাইট নেয়ার। গ্রুপ এর সদস্য সংখ্যা যদি বেশি থাকে তবে এয়ারপোর্ট এই রাতটা কাটিয়ে দিতে পারেন গল্প গুজব আর হাসি ঠাট্টায়। এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিব কানে কানে। সাবধান ভুলেও কারো সাথে শেয়ার করবেন না। দিল্লি থেকে লেহ এয়ার টিকেট ভুলেও আগে কাটবেন না। সবচেয়ে ভাল হয় যাওয়ার এক দুইদিন আগে কাটলে সেক্ষেত্রে বহুত ফায়দা হবে। আমার কথা বিশ্বাস না হলে......নিচের লিঙ্ক এ ঢুকে দেখতে পারেনঃ

মুহতারামে হাজেরিন, আশা করি আপনার সারা রাত অনেক আনন্দ বিনোদনেই কেটেছে। আপনার ফ্লাইট যদি খুব সকালে হয় তবে Indira Gandhi Intl Airport থেকে চলে যান Domestic এ। boarding pass নিয়ে security check in করে সোজা উঠে বসুন প্লেন এ। দিল্লি থকে লেহ প্রায় ২ ঘণ্টা । যদি সারারাত না ঘুমিয়ে থাকেন তবে ভুলেও এক মুহূর্ত এর জন্য হলেও চোখ বন্ধ করবেন না। আপনি হয়ত বিশ্বাস করবেন না যে কি বিস্ময় অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। কিছুক্ষন পরেই প্লেন এর জানলা দিয়ে যে নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে পারবেন… বরফ ঢাকা পাহাড় …… মনে হবে যেন ice cream এর দুনিয়া… কি যে সুন্দর… কি যে সুন্দর কিভাবে বুঝাই! একটু পরই ডান পাশে তাকালে কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যাবে Pangong লেক। প্লেন থেকে Pangong লেক এর ভিউ- মনে হবে যেন স্বর্গের জানলাটা খানিকক্ষণের জন্য খুলে গেলো । আপনার ভাগ্য যদি খুব বেশি ভাল থকে তবে peaks of K2, Nanga Parba, Gasherbrum দেখতে পারবেন। আমি হলফ করে বলতে পারি আপনি যদি সত্যি কার অর্থে একজন ভ্রমন পিপাসু হয়ে থাকে তবে পুরো লাদাখ ট্রিপ এক বিস্ময় এর ঘোর নিয়ে কেটে যাবে। লেহ Kushok Bakula Airport এক দেখার মত জিনিস। প্লেনটা এইখানে ল্যান্ড না করলে জীবনেও বিশ্বাস করবেন না কেউ যে এটাকে একটা এয়ারপোর্ট বলে। একটা ছোট্ট ঘর আর চারপাশে পাহাড় আর পাহাড়।

এয়ারপোর্ট এ কিছু formality শেষ করে একটা গাড়ি ভারা করে সোজা চলে যান হোটেলে। সেখানে check in করে নাস্তা খেয়ে কিছু সময় বিশাম নিন। তারপর প্রথমেই যে কাজ টা করবেন তা হল পরবর্তী দিনগুলোর জন্য একটা অনুমতি নেয়া। নুব্রা ভ্যালী আর Pangong লেক যেতে বাংলাদেশী দের একটা অনুমতি নিতে হয়। হোটেল থেকে বের হয়ে প্রথমেই যাবেন লেহ Palace এ । লেহ এর রাজার বাড়ি। সে এক “আট কুঠুরি নয় দরজা” type ব্যাপার। কত কত গলি ঘুপচি। লেহ প্যালেস ঘোরা হলে চলে যান শান্তি স্তুপা (peace pagoda)। দারুন জায়গা। অনেকটা দারজিলিং এর Japanese temple এর মত। ওখান থেকে লেহ এর দারুন panaromic ভিউ দেখা যায়। অবশেষে hall of fame দেখে স্থানীয় মার্কেটে কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করুন। লাদাখ এর একটা জিনিস খুব ভাল। ওখানে অনেকক্ষন দিনের আলো থাকে। এখানে সন্ধ্যা হয় প্রায় ৮ টার দিকে। এরপর হোটেলে ফিরে পরের দিনের প্ল্যান করে ফেলুন। গ্রুপে মানুষের সংখ্যা যদি বেশি থাকে তবে ভালো দেখে একটা গাড়ী ভাড়া করে ফেলুন। পাহাড়ি এলাকায় ড্রাইভার ভাল হওয়াটা ভীষণ জরুরী । সারারাত এয়ারপোর্ট এ নির্ঘুম রাত কাটিয়ে নিশ্চয় অনেক ক্লান্ত সবাই। তাই রাতের আহার শেষ করে নাক ডেকে একটা লম্বা ঘুম দিয়ে নিন।

খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে বের হয়ে যান । আজকের গন্তব্য......আরে বলছি তো একটু সবুর করুন। উপরে দিগন্তজোড়া আকাশ আর চারিদিকে উঁচু-নিচু পাহাড় আর পাহাড়। এ যেন এক অন্য রকম দুনিয়া। গাড়ি চলছে তো চলছেই আর হেমন্ত মুখপাদ্ধায় সেই বিখ্যাত গান......এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলতো। গাড়ি চলতে চলতে এরপর পেয়ে যাবেন পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু Motor driven road “Khardungla Pass” ৫,৬০২ মিটার (১৮,৩৪০ ফিট)। মন ভরে উপভোগ করুন সেই অপার সৌন্দর্য। এরপর আবার যাত্রা শুরু। একটু পর পথেই পাশেই পরবে Diskit Monestry. সেখানে কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করে আবার যাত্রা শুরু Nubra Valley র উদ্দেশে। যাত্রা পথে একটু পরেই পড়বে Hunder Village. সেখানে দুই কুজ ওয়ালা উট চড়ে ঘুরে বেড়ান বেশ কিছুক্ষন। পরিশেষে Nubra Valley তে এসে হোটেল এ চেক ইন করে রাতের খাবার খেয়ে নিন। হোটেলেই রাত্রিযাপন।
আজ তবে এততুকুই থাক। আপনাদের কারো কোন জিজ্ঞাসা,পরামর্শ থাকলে জানাতে দ্বিধাবোধ করবেন না।
বিদায় নিচ্ছি।
ভালো থাকুন। ভালো রাখুন।।

বগুড়া উত্তর বঙ্গের প্রাণ কেন্দ্র পুন্ড্র নগর মহাস্থানগড়


 পুন্ড্র নগরঃ বগুড়া উত্তর বঙ্গের প্রাণ কেন্দ্র

হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এই শহর বাংলাদেশের
প্রাচীন শহরগুলোর একটি।
মহাস্থান গড় (বাংলাদেশের প্রাচীন শহর)ঃ
মহাস্থানগড় প্রাচীন পুন্ড্রনগরী এর বর্তমান নাম।
মহাস্থানগড় বগুড়া জিলার শিবগঞ্জ থানার অন্তর্গত। এই
খানে ৪ হাজার বছরের পুরানো স্থাপনা আছে।
শক্তিশালী মাউর্যা, গুপ্ত এবং অন্যান্য রাজারা তাদের
প্রাদেশিক রাজধানী হিসাবে মহাস্থানগড় ব্যবহার
করতেন।পাল রাজাদের মূল রাজধানী হিসাবে
পুন্ড্রনগর ব্যবহৃত হয়েছে।এই বিশাল শহরের
ধংসস্তুপ করতোয়া নদীর পশ্চিমপ্রান্তে অবস্থিত
যা সুধু বগুড়া নয় বরং গোটা বাংলাদেশের অতীত
ঐতিহ্য ধারন করে।


১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে “বুচানন হামিল্টন” প্রথম
পুন্ড্রনগরের ধংসাবসেস আবিস্কার করেন।
পরবর্তিতে ডন্নেল, কন্নিংহাম এই নগরী
সম্পর্কে বলেন। প্রাচীন পুন্ড্রনগরীকে
মুসলিম শাসনামলের সম্পুর্ন স্বাধীন মুসলিমনগর
মহাস্থানগড়কে চিহ্নিত করেন স্যার কনিংহাম।
মাউর্যা,গুপ্ত,পাল এবং সেন বংশের প্রচুর চিহ্ন পুন্ড্র
তথা পুন্ড্রনগর এ আছে।কিন্তু আর্যান এর ভ্রমন এর
আগ পর্যন্ত এ গুলো অজানা ছিল। বরেন্দ্র অঞ্চল
(বগুড়া,রংপুর,দিনাজপুর,রাজশাহী,মালদাহ)ছিল পুন্ড্রদের
আসল বাসস্থান।
১৯৩১ সালে মহাস্থানকে প্রাচীন পুন্ড্রনগরী
হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।গুপ্ত রাজাদের পতন এর পর
রাজা শশাংক একটি শক্তিশালী রাজ্য পত্তন করেন।
শশাংকের মৃত্যুর পর বিখ্যাত চীনা ভ্রমনকারী ওয়ান
চুন ৬৯৩ সালে বৌদ্ধ স্থাপনা ভ্রমন এর জন্যে
পুন্ড্রনগর এ আসেন। তিনি সম্রাট অশক এর তৈরী
অনেক বৌদ্ধ মন্দির এবং আশ্রম দেখেন। তার বর্ননা
মতে, পুন্ড্র নগরী ছিল একটি সমৃদ্ধ নগরী এবং
এর আয়তন ছিল ছয় মাইল এর মত। এই জনপথ ছিল
অনেকটা এথেন্স,ব্যবলিওন,মিশর এর মত।
পুন্ড্রনগরী মহাস্থানগড় হয়ে ওঠে বাংলাদেশের
সমৃদ্ধশালী মুসলিম শাসনামলে।মহাস্থান এর আকর্ষণ
এর টিলার অপরে অবস্থিত মাজার।প্রতিদিন হাজার হাজার
মানুষ অনেক দূর থেকে এই স্থান ভ্রমন করতে
আসে। অনেক মানুষ তাদের “মানত” পূরণ
এর জন্যে এইখানে সমাগম করেন। এই জায়গা
মুসলমান,হিন্দু উভয় এর জন্যেই পবিত্রস্থান হিসাবে
বিবেচিত হয়।

কম খরচে সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটা

কম খরচে (২৫০০ টাকা মাত্র)আসুন সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটা থেকে.....
আমার কাছে এই মৌসুমটাই বেস্ট। কারণ এখন না শীত না গরম, সূর্য উদয় এবং অস্ত দেখা যাচ্ছে সুন্দরভাবে, সমুদ্রে ঢেউ আছে তবে সেটা ভয়ংকর কিছু নয়, পর্যটকদের এতটা ভীড়ও নেই, হোটেল ভাড়াও কম। প্রথমেই বলে রাখি ঢাকা থেকে বেশ কয়েকভাবেই কুয়াকাটা যাওয়া যায় তবে সবচেয়ে সহজ এবং দ্রুত হচ্ছে লঞ্চে যাওয়া। লঞ্চেও তিনভাবে যাওয়া কুয়াকাটা যাওয়া যায় তবে পটুয়াখালী হয়ে যাওয়া বেস্ট(আমার মতে)। যেহেতু পটুয়াখালী হয়ে যাওয়া বেস্ট (আমার মতে) তাই আমি এটার বর্ণনা দিচ্ছি।

#কিভাবে_যাবেন
সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী গামী লঞ্চে উঠুন। লঞ্চে ছেড়ে যায় বিকেল ৫-৬টার মধ্যে। ডেকের ভাড়া পড়বে ২০০-২৫০ টাকা। সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া পড়বে ১০০০-১২০০ টাকার মত। কম খরচে যেতে চাইলে স্টাফ কেবিনেও যেতে পারেন। ভাড়া পড়বে ১২০০-১৫০০ টাকার মত (স্টাফ কেবিন, ২-৩ জন ঘুমানো যাবে আরাম করে)। লঞ্চ পটুয়াখালী ভিড়বে সকাল ৫-৫:৩০ টার মধ্যে। ভোর হওয়াটা দেখতে পাবেন। কি সুন্দর নদী, নদীর পাড়, মাছ ধরার নৌকা, আস্তে রক্তিম সূর্য মামা উঁকি দিবে। আহা কি সুন্দর। এই সব কিছু দেখতে পাবেন বগা পাড় হওয়ার পর থেকে । অটো নিয়ে চলে আসুন বাস টার্মিনাল। ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা। কুয়াকাটা গামী বাসে উঠুন। কুয়াকাটা আসতে সময় লাগবে ১:৩০-২ ঘন্টা। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১২০-১৪০ টাকা।
কুয়াকাটা নেমে আগে হোটেল বুকিং দিন অথবা বিভিন্ন উৎসবে যাওয়ার আগে অবশ্যই আগে হোটেল বুকিং দিয়ে যাবেন। এখন পর্যটক কম তাই আপনি রুম পাবেন তবে কোন দালাল বা মোটর সাইকেল ওয়ালার খপ্পরে পড়বেন না। নিজে নিজে রুম দেখে বুকিং দিন। দর দাম করে নিন। দর দাম না করলে ঠকবেন। সিঙ্গেল রুম ৪০০-৬০০ টাকার মধ্যে পাবেন। ডাবল রুম ১০০০ টাকার মধ্যে পাবেন (৩-৪ জন এমনিতেই ঘুমানো যাবে।) সকাল ৮টার মধ্যে পৌঁছিয়ে যাবেন কুয়াকাটা।
#ঘুরাঘুরি
রুম বুকিং দিয়ে নাস্তা করে ঝাপিয়ে পড়ুন সমুদ্রে। আহা!!! কোন কথা হবে না খালি ডুব হবে। নাক, কান,চোখ,মুখ দিয়ে লোনা পানি ঢুকলেও ডুব চলবে। দুপুর একটার মধ্যে চলে আসুন হোটেলে। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বেড়িয়ে পড়ুন। দুপুরের দিকে যেতে পারেন লেবুর বন, শুটকি পল্লী, ফিস ফ্রাই, তিন নদীর মোহনা, ঝিনুক বীচের দিকে। মোটর সাইকেলে যাবেন ভাড়া পড়বে ২০০ টাকার মত (দরদাম করে নিন)। ফিস ফ্রাই এ বসে সামুদ্রিক মাছ ভাজা/ কাঁকড়া খেতে পারেন। বিকেলে দিকে চলে আসুন কুয়াকাটার মেইন বীচের। সূর্য ডোবা দেখুন। চোখ জুড়িয়ে যাবে। বসে থাকুন যতক্ষণ খুশী অথবা রাখাইন মার্কেট থেকে ঘুরে আসতে পারেন। তার পরের দিন সূর্য উদয় দেখতে যাবেন। আগের দিনই মটর সাইকেল বুকিং দিয়ে রাখুন। সূর্য উদয় সহ বারোটি স্পট একবারে ঘুরে আসুন মটর সাইকেলে ভাড়া পড়বে ৪০০-৫০০ টাকার মত (অবশ্যই দামাদামি করবেন)। সূর্য উদয় দেখতে হলে রেডি হতে হবে ভোর ৫টার মধ্যে। ভোর বেলার সমুদ্র আপনাকে অন্য রকম একটা অনুভূতি দিবে। সূর্য উদয় সহ অন্যান্য স্পট দেখে কুয়াকাটা ফিরে আসবেন। রাখাইন পল্লীতে গিয়ে কিছু কিনতে পারেন এবং অবশ্যই মহুয়ার পাটিসাপটা পিঠা খেতে ভুলবেন না। ফিরে আসার সময় পড়বে সূর্যমুখী ফুলের বাগান। দেখে আসতে ভুল করবেন না। কুয়াকাটা ফিরে আসতে আসতে সকাল ১০টার মত হয়ে যাবে। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে আবার যান সমুদ্রে ঝাপাঝাপি করতে অথবা নৌকায় করে যেতে পারেন ফাত্রারার বন। ফাত্রারার বন যেতে চাইলে আগেই নৌকা বুকিং দিতে হবে। দুপুরে রুমে এসে নাস্তা করে হালকা শপিং করে নিতে পারেন।
#ফিরে_আসা
কুয়াকাটা থেকে সরাসরি বাস করে ঢাকা আসতে পারেন। ভাড়া পড়বে ৫৫০টাকা। বাস ছেড়ে আসে ৫:৩০-৬:৩০ মধ্যে। বাসের টিকেট আগেই বুকিং দিন। অথবা কেউ যদি লঞ্চ আরামসে আসতে চান তাহলে তাকে ১:০০ একটার মধ্যে কুয়াকাটা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্য বাসে উঠতে হবে। বাস পটুয়াখালী আসবে ২:৩০-৩:০০ মধ্যে। পটুয়াখালী নেমে খাওয়া শেষ করে, কিছু খাবার পার্সেল করে নিয়ে লঞ্চে উঠুন। মনে রাখবেন পটুয়াখালী থেকে বিকাল ৫:০০-৫:১৫ মধ্যে সব লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসে। তারমানে আপনাকে এর মধ্যেই সব আসতে হবে পটুয়াখালী।
#খরচ
২ দিন ১ রাত থাকা এবং ঢাকা থেকে যাওয়া আসা এবং খাওয়া মিলে আমার খরচ পড়ছে ২৫৩৯ টাকার মত (ফাতাত্রার বন সন ২৮৫৫টাকার মত)। আমরা ছিলাম তিনজনের গ্রুপ। তারমানে আপনি সিঙ্গেল হোন বা গ্রুপ ২৫০০-৩০০০ টাকার মধ্যে কুয়াকাটা ঘুরে আসতে পারবেন। তাহলে আর দেরী কেন? ঘুরে আসুন সমুদ্রকন্যার কাছ থেকে।
আর জানেন তো সমুদ্রের ডাক উপেক্ষা করা অনেক কঠিন

কম খরচে এক দিনের রাঙ্গামাটি আর কাপ্তাই ভ্রমন

ঢাকা থেকে ১৫০০/১৬০০ আর চট্রগ্রাম থেকে ৫০০ টাকা !!
(আমি ১৫০০/১৬০০ টাকা দিয়ে এসেছি একটু কষ্ট হবে কিন্তু কম টাকাই আর কি করা !!) 
আমার প্লেন যেহেতু আমি এভাবেই গিয়েছি !!
সন্ধ্যা ৭ঃ৩০ মিনিটে গাবতলি থেকে হানিফ দিয়ে রাঙ্গামাটির বাসে , ভাড়া ৬২০ টাকা।খুব ভোরে চলে আসবেন।এসেই চলে যাবেন রাজবন বিহার দেখতে।নৌকা দিয়ে পারাপার জনপ্রতি ৫ টাকা।সিএনজি দিয়ে জনপ্রতি ১৫/২০ টাকা করে নিবে।তারপর ঝুলন্ত ব্রিজ চলে যান সিএনজি দিয়ে জনপ্রতি এখানেও ১৫/২০ টাকা করে নিবে। তবে ব্রিজে প্রবেশ ফি ২০ টাকা দিয়েই ব্রিজে উঠতে হবে।তার পর ১০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিয়ে চলে যান ডিসি বাংলো।
এবার পেটে কিছু দেয়ার পালা !! ( টাকা থাকলে আর ৪/৫ জন হন ৪০০/৫০০ টাকা নৌকা দিয়ে শুভলং যেতে পারেন )

তারপর চলে যান ২০ দিয়ে চলে যান বিহারিপল্লি থেকে চলে যান । সেখান থেকে ৮০ টাকা জনপ্রতি বা ৪০০ টা রিজাব করে যাবেন কাপ্তাই।রাস্তাটা অসম্ভব সুন্দর !! আপনি সিএনজি নিলে রাস্তার মাঝে কিছুক্ষন থামতে পারেন।কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক এ নেমে যেতে পারেন এটা ঘন্টা খানেক দেখে ২০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিয়ে কাপ্তাই শহরে যেতে পারেন !!শহরে গিয়ে কর্ণফুলী নদীর পারে মসজিদের সামনেই দেখবেন পানি উন্নয়ন বোর্ড এর হোটেল দেখতে খুব ভাল না হলেই ৭০/৮০ টাকা দিয়ে ভালভাবেই খাবার খেতে পারেন। তারপর অনুমুতির জন্য চলে যান কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।অনুমুতি পেলে ঘুরে আসুন তবে ছবি তুলবেন না।তবে বাসের টিকিট টা কেটে নিয়ে ঢাকা অব্দি ৬২০ টাকা করে নিবে।
এবার ৭ঃ৩০ এর বাস দিয়ে ঢাকায় !!
খরচ ঃ (জনপ্রতি )
বাস ৬২০+৬২০ =১২৪০
সিএনজি ১২০/১৫০ টাকা
খাবার ৩০+৭০=১০০ টাকা
প্রবেশ ফি সব মিলিয়ে ৫০ টাকা
সব মিলিয়ে ১৫৪০ টাকা
চট্রগ্রাম থেকে গেলে বাস ভাড়া হবে ১০০ করে।
মানে ৫০০ টাকার ভিতর !
তবে ৪/৫ জন মিলে গেলে সুবিদা হবে।
বিস্তারিত কিছুই বলার নাই।যা জানার ছিল তার সব লিখার ট্রাই করেছি !