Friday 15 December 2017

সেন্টমার্টিন মেইন বিচ

১.যাওয়া
নন এসি বাসে টেকনাফ -৯০০টাকা (২দিন আগে টিকিট করুন । সৌদিয়া হলে ভালো হয় মোবাইল/পাওয়ার ব‍্যাংক চার্জ দিতে পারবেন ।)
সি ট্রাকে ওপেন ডেকে ৫৫০ টাকা আপ ডাউন । (৮/৯ দিন আগে টিকিট করবেন । শুক্রবার/শনিবার/বিশেষ দিন ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি শেষে যেতে গেলে ১০/১২ দিন আগে টিকিট করবেন । ঢাকা থেকে টিকিট না করেও যেতে পারেন। ভাগ্য ভালো হলে ভালো সি ট্রাক পাবেন না হলে যেগুলোতে ৪গুণ বেশি যাত্রী নেয় সেটায় স্টান্ডিং এ যাবেন । স্টান্ডিয়েও ৫৫০টাকা ভাড়া । )
২.থাকা
হোটেল ডাবল বেড প্রতি রাত প্রতি রুম ৮০০ টাকা (৪/৫/৮/৯/১০ এর জন্য , আমার ৪জন ছিলাম, ২রাতে ২০০+২০০=৪০০টাকা লেগেছে প্রতি জনের । ২/৩ দিন আগে বুকিং করলে রুম ভালো পাওয়া যায়। )
হোটেল স্বপ্ন প্রবাল -০১৭২৩০৮২০৪৮,০১৯১১৫৫২৪৫৬

৩.খাওয়া
ক. টেকনাফে নেমে -৮০ টাকা(পরটা, ভাজি , ডিম )
খ. সেন্ট মার্টিন নেমে দুপুরে -১২০ টাকা( ভাত , ভর্তা, মাছ ভাজি , ডাল)
গ.সেন্ট মার্টিনে রাতে - ১৪০টাকা ( ভাত , ভর্তা, মাছ ভুনা , ডাল)
ঘ.সেন্ট মার্টিনে নাস্তা - ৮০টাকা (পরটা, ভাজি , ডিম , চা ) /(খিচুড়িও খেতে পারেন দাম একই)
ঙ. ছেড়া দ্বীপে দুপুরে - ১৩০ টাকা(ভাত , আলু ভর্তা,মাছ ভর্তা , ডাল । অসাধারণ পরিবেশ ছিল ।)
চ. সেন্ট মার্টিনে রাতে - ২৫০ টাকা (বারবিকিউ কেজি ৭০০ টাকা কেজি , আমারা ৪জন ছিলাম । ৪টা ছোট কোরাল মাছ নিয়েছিলাম । ১৩০০গ্ৰাম ছিল ৯০০ টাকা লেগেছিল । আর ১০০টাকা দিয়ে ৪জনের ভাত,ডাল,ভর্তা নিয়েছিলাম । এইভাবে ১০০০ টাকা লেগেছিল ৪ জনের । )
ছ. সেন্ট মার্টিনে নাস্তা - ৮০ টাকা(পরটা, ভাজি , ডিম , চা )
জ. সেন্ট মার্টিন দুপুরে -২০০টাকা ( ভাত , ভর্তা, মাছ ভুনা , ডাল । একদম ঘাট থেকে খেয়েছিলাম । বাজেটে খেতে গেলে ঘাট থেকে খাবেন না ।)
ঝ. যাওয়া আসার সময় বাসে ১৫০-১৮০ টাকার মত খাওয়ার পিছনে খরচ হয়েছে । তাও ভাল কিছু খেতে পারিনি । ভালো হয় যাওয়া আসার সময় ৫০+৫০=১০০ টাকার স্ন্যাকস কিনে রাখুন ।
হাসান রেস্তোরাঁয় খেতে পারেন । আমার বেশ ভালো
সেবা পেয়েছি তাদের কাছ থেকে ।

৪. আসার খরচ -৯০০ টাকা বাস । (ভালো হয় টেকনাফে নেমেই টিকিট করে রাখবেন । তাহলে ভালো বাস পাবেন ।)
৫. অন‍্য খরচ -
ক. সাইকেলিং -৫০( ১ ঘণ্টা) টাকা
খ. বিভিন্ন সময়ে ডাব খাওয়ার জন্য -২০০ টাকা
গ. ছেড়া দ্বীপে হেটেই গিয়েছিলাম । রাস্তায় ৫০ টাকার নাস্তা । আসার সময় জোয়ারের পানি চলে আসায় ২০ টাকা নৌকা । আর ২০ টাকা ভ‍্যান ।
ঘ. ফ্লাক্সিলোড - ১৫০ টাকা ।
ঙ. একজন বেশ ভালো গাইড পায়ে ছিলাম । তার ১বেলা খাবার এবং ১০০ টাকা । ১৫০ টাকার মত হবে প্রতি জনের । গাইড খুবই ভালো । সে এক টাকাও নিতে চায়নি এমনকি খাওয়ার টাকাও নিতে চায় নি। তাও আমারা ৫০০ টাকা দিয়ে আসছি এবং এক বেলা খাবারের টাকা দিয়েছি ‌। কেননা আমাদের বেশ সহোযগিতা করেছে । যাতে আমাদের কষ্ট
এবং টাকা সাশ্রয় হয়েছে ।
চ. ক‍্যাম্প ফায়ার করেছিলাম । তখন লাকড়ি ও কেরোসিনের জন্য ৫০ টাকা লেগেছিল প্রতি জনের ।
মোট খরচ - ৪৫০০ টাকা
বাস- ১৮০০ টাকা
সি-ট্রাক- ৫৫০ টাকা
হোটেল - ৪০০(২রাত) টাকা
খাওয়া- ১১৫০ টাকা
অন‍্যান‍্য -৬০০ টাকা
সেন্টমার্টিনে আমারা প্রচুর আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখেছি যেটি আমাদের কাম্য নয় ।
দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই আবর্জনা গুলো ফেলারও যথেষ্ট কোনো উপযুক্ত স্থান আমারা পাই নি । আশা করি সংশ্লিষ্ট মহল ব‍্যাবস্থা নিবেন। আর যারা ভ্রমণে যাচ্ছেন তারাও সতর্ক থাকবেন ।

Thursday 9 November 2017

কাপ্তাই লেকে

কাপ্তাই লেকে একদিন - বাংলাদেশের মানচিত্রের বৃহত্তম জেলা হিসেবে সমাদৃত রাঙামাটি। পর্যটকদের জন্য রাঙামাটি শুধু অলস সৌন্দর্যের আঁধার ই নয় বরং অনন্তযৌবনা যা কখনো বার্ধক্যে ক্ষয়ে যাবে না। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম লেকের উপস্থিতি (কাপ্তাই লেক) রাঙামাটি কে পর্যটকদের কাছে পূর্ণতা প্রদান করেছে। রাঙামাটির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য, কোথাও সবুজের চাদরে জড়ানো প্রকৃতি স্বর্গীয় রূপে ধরা দিবে আবার কোথাও পাহাড়ের চূড়া কে ছুঁয়ে দিগন্ত রেখায় মিলিয়ে যাবে দুরন্ত মেঘমালা। 

নি:সন্দেহে রাঙামাটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ- ঝুলন্ত সেতু যা "Symbol of Rangamati" নামেই সর্বাধিক সমাদৃত। প্রায় 335 ফুটের মতো দৈর্ঘ্যের এ ঝুলন্ত সেতু দুইটি বিচ্ছিন্ন পাহাড় কে এক সুতোয় মিলিয়ে দিয়েছে। শেষ বিকেলের আলোয় ঝুলন্ত সেতু থেকে কাপ্তাই লেকের মায়াবী রূপে আপনি অভিভূত হবেন ই, জোর দিয়ে ই এটা বলা যায়।
পাশাপাশি, শুভলং ঝর্ণা রাঙামাটি র আরেকটি বিজ্ঞাপন। আর, এদেশের অন্যান্য ঝর্ণা র মতো শুভলং এর ও ভরা যৌবন কিন্তু ভরা বর্ষাতেই পাবেন। অন্যাথা হতাশ হবেন।
এর বাইরে, চাকমা রাজার প্রাসাদ, রাজবন বিহার, পেদা টিং টিং মোটামুটি উল্লেখযোগ্য। এ পর্যন্ত দু'বার রাঙামাটি যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। প্রথমবার, সরকারি গেস্ট হাউসে আর পরের বার হোটেল নাদিসা ইন্টারন্যাশনাল এ ছিলাম। রিজার্ভ বাজারে, কাপ্তাই লেকের খুব কাছেই এ হোটেলটি তে আমাদের খুব ভালো সময় কেটেছিল। এতটাই ভালো লেগেছিল যে, বর্ষার মধ্যে একটা দিন শুধু হোটেলের রুমে ই ঘুমিয়ে কাটিয়েছিলাম। আর সারাদিনের জন্য নৌকা ভাড়া পড়েছিল বারোশো টাকার মতো।
# অবশ্যই প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করবেন। আমার, আপনার দায়িত্বপূর্ণ আচরণের ই পারে আমাদের প্রকৃতি কে পরিচ্ছন্ন রাখতে। (ঢাকা- রাঙামাটি- কাপ্তাই লেক)।

Friday 25 August 2017

বান্দবানের নাফাখুম অমিয়াখুম ভেলাখুম সাতভাইখুম

নাফাখুম-অমিয়াখুম-ভেলাখুম-সাতভাইখুম
গ্রুপে এত্ত পোস্ট দেখে ১২ জন মিলে পাগলামির ঝোকে রওনাই দিয়ে দিলাম বান্দবানের উদ্দেশে , বেঁচে ফিরতে পেরেই এখন ভাল লাগছে।
যাই হোক ট্যুরের ডিটেইলস বর্ণনা নিচে দেয়া হলঃ
২৪ তারিখ ঈগল এর রাত ১০-১৫ এর বাসে রওনা হলাম বান্দরবানের উদ্দেশে। টিকেট ৬২০ করে।
আমি সাজেস্ট করব কাউকে ঈগলে এ না যেতে সিটের অবস্থা ও খারাপ, গাড়ি টানেও না ভাল মত। আমাদের বলছেলি ৬ টায় পৌঁছাবে বলে পোউচ্ছে ৯-৩০ এ। তাও আমাদের টিকেটই আবার তারা অন্য লোকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। আমরা ১২জন ছিলাম হইচই করে একটা গতি করতে পেরেছি। সার্ভিস খুব ই খারাপ। নন এসি সব বাস এর টিকেট মূল্যই ৬২০ করে।
পোউছে "তাজিওডং" রেস্টুরেন্টে প্রাতঃরাশ সারলাম। খরচ চা- খিচুরি ১৭০ এর মত পড়ল মাথা পিছু। পরিমান অল্প হয়ে গিয়েছিল, তবে আমাদেরই বোকামি হয়েছে খিচুরি নেয়া খিদা পেটে নিয়ে।
যাই হোক, এবার থাঞ্চি যাওয়ার পালা, চাদের গাড়ি নরমালি যেইখানে ছাড়ে সেইখানে পোউছে দেখি ৩-৪ টা মাত্র আছে বাকি সবই চলে গেছে। আর তারাও নবাবজাদার মত ১০,০০০ করে চাচ্ছে। ( আসলে সঠিক দামে গাড়ি পেতে হলে ৮টার মধ্যেই চাদের গাড়ি ঠিক করে ফেলা ভাল) ।

আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম বাস-এ যাব। বাস কাউন্টারে যেয়ে দেখি বাস ১১টার টা আর ১টার টা দুইটারই সিট ফিল আপ, ছাদে যেতে হবে। পথে পড়ল একটা ট্রাক, সে আমাদের বলিপাড়া পর্যন্ত আগায় দিতে রাজি হল, এরপরে অনেক সাধাসাধি করে সে ৬০০০ এ থাঞ্চি পর্যন্ত যেতে রাজি হলেও হটাত দেখি একটা চাদের গাড়ি, তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যাবে নাকি সে বলল ৬০০০। সবাই লাফ দিয়ে উঠে পড়লাম। এখন কথা হল কয়জন চাদের গাড়িতে বসতে পারবে? পিছে ১২ জন, সামনে ২ জন চাপাচাপি করে বস্তে পারবে। আরো ৩ জন সেইফ্লি দাঁড়ায় যেতে পারবে। এর বেশি হলেও ঝুলে যেতে পারবে কিন্তু রিস্কি।
১২ টার দিকে রওনা দিলাম থাঞ্চির উদ্দেশে , ড্রাইভার মামা প্রায় উড়ায় নিয়ে ২-১৫ তে পোউছায় দিল থাঞ্চি। যাদের মোশন সিকনেস আসে তারা এভোমিন খেয়ে উঠবেন, কেননা মাথা ঘুড়ায়।
এইবার গাইড ঠিক করার পালা, নরমালি মাফাখুম পর্যন্ত ২ দিন ১০০০+৫০০=১৫০০ আর নাফাখুম যাওয়ার সময় আরেকজন গাইড ৫০০, মোট ২০০০ খরচ। আমরা বললাম, অমিয়াখুম সাতভাইখুম নাফাখুম কত নিবেন টোটাল বলেন? বলল ১০,০০০। আমরা তো এত দিবই না। এই নিয়ে অনেক হাউকাউ এরপরে ঠিক হল ৫,০০০ টাকা। তখনও জানতাম না যে কপালে কি শনি আছে।
নৌকাও ঠিক করে দিল গাইড। ১২ জন, ৩ নৌকা , ২৫০০ করে প্রতিটা। আর আসার সময় ২টা নৌকা ১০০০ করে। মানে আপ-ডাউন প্রতি নৌকা ৩৫০০ করে। আপ ডাউন একসাথে না নিলে আবার খরচ বেড়ে যাবে। এখন এইখানে কথা হল আমাদের ৩ নৌকার ২ টা অনেক বড় ছিল সেখানে ৬ জন করে আরামেই হয়ে যেত, ১ টা ছিল ছোট। কাজেই ১২ জনের গ্রুপ ২ নৌকাতেই হয়ে যেত। থাঞ্চি থেকে নৌকা করে রেমাক্রি, ২-৩০ ঘন্টা। এবং রিস্ক ফ্রি। পথে ভিউ অনেক সুন্দর। বড় পাথর, ছোট পাথর, দেবতা পাহাড় সব দেখে গেলাম থাঞ্চিতে। যেয়ে দেখি সন্ধ্যা দিদি সম্ভবত নাম, তার যে কটেজ তা ফাকা নাই। তো অন্য আরেকটা বাসায় উঠলাম থাকা প্রতিজন ১০০, আর রাতে ভরতা, ডাল, ভাত, ডিম ১০০। খাওয়া এক কথায় অমৃত ছিল। রাতে যদিও ইদুর বিড়াল গায়ের উপর দিয়ে দৌড়াদৌড়ী করছে। রাতে রেমাক্রিতে ছিলাম। ( কোন নেটয়ারক থাকে না , কোন সিমেরই)
পরদিন সকালে উঠে খেয়ে ( খাওয়া মাথাপিছু সেই ১০০ টাকাই ডিম দিয়ে খেলে , মুরগি দিয়ে খেলে ১৫০- সে সব জায়গাতেই ) রওনা দিলাম নাফাখুম দেখে, থুইসা পাড়ায় যাব। পিঠে ব্যাগ নিয়েই রওনা দিলাম আর একেকজনের ব্যাগের ওজন ১২-১৩ কেজি। সাথে পানি কিম্বা স্যালাইন ও নেই নি। তখনও বুঝিনি এত কাপড় এনে ভুল করলাম কি। নরমালি ১-৩০ ঘন্টা হাটা হয়া উচিত নাফাখুম রেমাক্রি থেকে, কিন্তু পথে রেস্ট, চা পানের বিরতি, সাথে তো ব্যাগের কারনে আমাদের ২-৩০ ঘন্টার মত লাগল।
যেয়ে ইচ্ছামত গোসল করে উঠে থুইসাপাড়ায় রওনা দেয়ার সময় দেখলাম যে বাজে বেলা ১২টা। গাইড মামাকে জিজ্ঞেস করলাম কতখন লাগবে বলে ২-৩০ ঘন্টা।
হাটছি তো হাটছি পথ আর শেষ হচ্ছে না, এর মাঝে সরূ ক্লিফ দিয়ে পাড় হয়ে, ব্যাগের ওজন, জঙ্গল দিয়ে পার হয়া, হাটু পানি দিয়ে হাটা এসব তো আছেই। যাদের ট্রেকিং এর অভ্যাস নাই, নাফাখুমের পরে খালি শখ আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে যাওয়ার চেস্টাই করবেন না। এই ভুল কোনভাবেই করবেন না। নাফাখুম পর্যন্ত ট্রেইল তো শিশু, এরপরে যা আছে তা পুলসিরাত। মামাকে জিজ্ঞেস করলে বলে ৩০ মিনিট, কিন্তু সেই ৩০ মিনিট আর শেষ হয় না। এর মাঝে খাড়া অনেক উচু পাহাড়ে থুইসা পাড়া, সেই পাড়ায় উঠতে আবার জীবন যায় বের হয়ে। যা বলে বুঝানো সম্ভব না, সাথে আছে আবার ব্যাগ। সুপার ফিট না হয়ে ভুলেও এই ট্রেইলে যাবেন না। শেষ মেশ প্রায় ৪-৩০ ঘন্টা হেটে আমরা পৌছাই থুইসাপাড়া, এখানে খালি চাইনিজ মোবাইল ফোন হলে রবির নেটয়ারক পাওয়া যায় নাইলে না। তুইসা পাড়ায় আমাদের ১২জনের থাকা এবং ৩ বেলা ভাত মুরগি খেয়ে খরচ পড়ল মোট ৭৬০০ টাকা।
পরেরদিন অমিয়াখুম, সাতভাইখুম যাব কি যাব না, চিন্তা করতে করতেই আরেকদল ঢুকল তারা বলল যে তাদের ৭ জন গ্রুপ গেছিল , ভোর ৬ টায় রওনা দিয়ে তারা ৪ জন সন্ধ্যা ৬ টায় ফিরেছে, ৩ জন রাস্তায় বসে আছে আর এনারজি নাই। ( তারা রাত ৯টায় এসেছিল )। তারা বলল ভাই এডভেঞ্চার ভাল লাগলে যান, নাইলে নাই। আর ফিট হইলে যান, নাইলে রেস্ট নেন। তারা আরো বলল দেবতা পাহাড় উঠা লাগে, তা কস্ট করে উঠা যায় ১ঘন্টা লাগায়, কিন্তু সেই পাহাড় থেকে নামতে নাকি খবর হয়ে যায় কেননা একদম খাড়া নিচে নেমে গেছে , পদে পদে বিপদ আর প্রান হাতে নিয়ে যাওয়া লাগে। এই কথা শুনেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে আর যাব না, একেবারে পদ্মমুখ হয়ে থাঞ্চি ফিরে যাব পরেরদিন। কেননা ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের অবস্থাই বেশি ভাল না।
পরেরদিন আমরা সকাল ৯টার দিকে পদ্ধমুখ থেকে যখন রওনা দেই তখন গাইড মামা বলে ৪-৩০ ঘন্টা রাস্তা দুইটা পাহার উঠে নামতে হবে। রাস্তা সোয়াম্পে ভড়া, ঝিরিপথ দিয়েও অনেক হাটতে হয়। ২টা পাহাড় অনেক কস্ট করে উঠে নামার পরে মামাকে জিজ্ঞেস করি আর পাহাড় আছে, সে বলে এইগুলা তো পাহার ছিল না, সামান্য ছিল, পাহাড় তো সামনে। সংখ্যা বলতে পারব না , কিন্তু এট লিস্ট ৫টা পাহাড় উঠে নামা লেগেছে পদ্মমুখ পৌঁছতে, মাঝে সোয়াম্পে সবাইকে কমসে কম ৪ টা করে জোক ধরেছে। আরেকগ্রুপের সাথে কথা হল তারা রাতে এই ট্রেইলে আসছে, তখন দূরে গুলির আওয়াজ পেয়েছে , এবং তাদের নাকি পাথর মারা হয়েছে। অনেকে বলল ও যে সন্ধ্যার পরে এই ট্রেইলে ডাকাতের উতপাত আছে। যাই হোক মামার ৪-৩০ ঘন্টার জায়গায় আমাদের ব্যাগ দিয়ে হাটা- রেস্ট মিলায় আমাদের প্রায় ৬-৩০ ঘন্টা থেকে ৭ ঘন্টা লেগেছিল ফিরে আসতে পদ্মমুখ । রাস্তার ভয়াবহতার কিছু ভিডিও আছে যা পরে আপ্লোড করব।
এসে ৩০ মিনিটের মধ্যে থাঞ্চি পৌছে একটা রেস্ট হাউজে উঠি ২ রুমের ভাড়া নেয় ২০০০ টাকা। আর রাতে বার বি কিউ করি। একটু খোজ নিলেই জানতে পারবেন যে বার বি কিউ এর সব ব্যাবস্থাই আছে থাঞ্চি তে।
পরেরদিন দুপুর ১২টায় একি চাদের গাড়ির মামা এসে আমাদের নিয়ে যায়, পথে নীল্গিরি, শৈলকুপা দেখি, দেখে নীলাচল রেস্তোরাতে খাই ( খাবার খুবই মজা, দাম ও মাথা প্রতি ২২০ ছাড়ানো কঠিন ) খেয়ে নীলাচল ঘুরে এসে মামাকে ৮০০০ টাকা দেই। এরপরে রাত ৯টার বাসে উঠে শ্যামলী ( সার্ভিস ও বাস দুইটাই ভাল, চালায় ও ভাল, ভোর ৬টায় টেকনিক্যালে নেমেছি আজকে ) তে করে ঢাকায় চলে আসি।
নাফাখুম পর্যন্ত যেতেই পারবেন ( ছবিতে নাফাখুম, আমারই তোলা )। কিন্তু এরপরে যেতে পারবেন নাকি বুঝে শুনে এরপরে যাবেন প্লিজ।
আর আমি? আমি আরো ফিট হয়ে এরপরে অমিয়াখুম-সাতভাইখুম নিয়ে চিন্তা করব।
আর আমাদের সবার মাথা পিছু যাওয়া আসার বাস ভাড়া থেকে শুরু করে টুকটাক চা খাওয়া, কলা খাওয়া, বার বি কিউ সহ ৬০০০ করে খরচ হয়েছে।

Thursday 6 July 2017

শ্রীমঙ্গল ট্যুর

একদিনের শ্রীমঙ্গল ট্যুর!!
চা এর রাজধানী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল খুব সহজেই কম খরচে একদিনের ট্যুর দেওয়া যাবে মোটামুটি ১০০০ টাকার মধ্যে সম্ভব।
বাসে সায়দাবাদ থেকে সরাসরি শ্রীমঙ্গল এর বাস রুপসী বাংলা বা হানিফে করে রাত ১১-১১.৩০ এ যাত্রা শুরু করলে শ্রীমঙ্গল ভোর ৪-৫ টার মধ্যে পৌঁছাতে পারবেন। 
চাইলে রাতের সিলেটগামী উপবন ট্রেনে যেতে পারবেন সেক্ষেত্রে ভোরে নামবেন শ্রীমঙ্গল ।
সকাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে পানসী হোটেলে সকালের নাস্তা করে সি.এন.জি রিজার্ভ করে শুরু করেতে পারেন, ভ্রমণ খুব সকাল সকাল যাবেন লাউয়াছরা জাতীয় উদ্যান।
যেখানে দেখা পেতে পারেন বানর হনুমান বনে। ট্রেকিং করে সরাসরি চলে যাবেন মাধবপুর লেক চারদিকে চা বাগান এর মধ্যে অসাধারণ পরিষ্কার পানির লেক, এখানে দেখা মিলবে দুষ্প্রাপ শাপলা যেখানে চাইলে গোসল করা যাবে।

সেখানে কিছুক্ষণ থেকে নুরজাহান চা বাগান এর ভিতর দিয়ে শহর এর দিকে আসবেন, অসাধারণ চা বাগান নুরজাহান চা বাগান দুইপাশে উঁচু পাহাড়ে বাগান মধ্যে দিয়ে শান্ত রাস্তা বাগান এর শেষ দিকে পাবেন আনারস বাগান লেবু বাগান ভাগ্য ভালো থাকলে সরাসরি বাগান থেকে আনারস লেবু কিনতে পারবেন এরপর শহরে এসে দুপুরের খাওয়া পানসী হোটেলে শেষ করে চলে যেতে পারেন।
সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা বিকেলে নীলকন্ঠ চা কেবিনে সাত রঙ এর চা আমারা অবশ্য পাঁচজন দেখার জন্য এক কাপ নিয়েছিলাম ওদের লেবু চা ভালো লেগেছিলো বেশি সাত রঙ থেকে। সাথে পেয়ে যাবেন চা গবেষনা ইনস্টিটিউট তারপর বিকেল পাঁচটার ট্রেনে সরাসরি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা, আসার যাত্রাপথ আপনি দেখতে পাবেন ট্রেন থেকে দুইপাশের চা বাগান লেবুগাছ এর সমারোহ।
খরচ:
বাস ভাড়া-২৫০ (রুপসী বাংলাতে) হানিফে ৩৮০-৪০০
সকাল এর নাস্তা-৫০
সি.এন.জি রিজার্ভ -(১২০০÷৫)=২৪০
দুপুর এর খাবার- ১৫০
আসার ট্রেন ভাড়া-২০০
অন্যান্য-১০০
মোট- ৯৯০ টাকা
উল্লেখ্য সি.এন.জি রিজার্ভ সারাদিনের জন্য ড্রাইভারই আপনাকে সব ঘুরিয়ে দেখাবে আপনি যেভাবে বলবেন স্পট গুলো কেউ চাইলে গলফ ক্লাব বা বধ্যভূমিতে যেতে পারেন সময় করতে পারলে।
এটা পাঁচজন এর ট্যুর প্লান চাইলে নিজেরা নিজেদের মতো করে পরিবর্তন করে নিতে পারেন,
আর শ্রীমঙ্গল অবশ্যই পানসী তে খাবেন অসাধারণ খাবার কম দামে, আর আসার সময় রেলস্টেশন এর সামনে থেকে দোকান গুলো থেকে চা কিনে নিতে পারেন শ্রীমঙ্গল এর স্মৃতী হিসেবে, রাত ১০-১১ টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন ঢাকা।
বর্ষাতে অসাধারণ ভাবে ফুটে উঠে শ্রীমঙ্গল এর সৌন্দর্য একদিন বর্ষার দিন হয়ে উঠতেপারে অসাধারণ উপভোগ্য।
হ্যাপি ট্রাভেলিং