Thursday 1 February 2018

রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি সিরাজগঞ্জ

শাহজাদপুরের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। ১৯৩৯ সালে তের টাকা দশ আনায় জমিদারি কিনে নেয় তার পরিবার। তার আগে এখানে ছিল নীলকরদের নীলকুঠি। ১৮৯০ সালে লন্ডন থেকে ফিরে আসার পর রবীন্দ্রনাথের উপর এই জমিদারি তদারকির দায়িত্ব আসে। ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ শাহজাদপুরে জমিদারি দেখাশোনা করেছেন। প্রায় দশ বিঘা জমির ওপর পুরো কাছারি বাড়ির অবস্থিতি।
প্রধান ফটক পার হয়ে ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে হলুদ রঙের দোতলা কুঠি। নিচের তলা জুড়ে রবীন্দ্রনাথের আঁকা ছবি, চিঠি এবং তার হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির পাতার অংশ বাধাই করে দেয়ালে টানানো রয়েছে। দ্বিতীয় তলার কক্ষগুলোতে আছে রবীন্দ্রনাথ ব্যবহত নানারকম আসবাব-তৈজষপত্র। এছাড়া আরও বহু কিছু একসময় এখানে ছিল। যেগুলো পরবর্তীতে জাতীয় জাদুঘরে স্থানান্তরিত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি-সম্ভারের উল্লেখযোগ্য অংশ শাহজাদপুরে বসে রচিত হয়েছে। পোস্টমাস্টার, ছুটি, সমাপ্তি, ক্ষুধিত পাষাণ, অতিথি গলাপগুলো এখানে লিখেছেন। শাহজাদপুরে নিজ চোখে দেখা বাস্তব চরিত্রগুলো তার সাহিত্যে স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে, গোপাল সাহার মেয়ে সমাপ্তি গল্পের নায়িকা, হারান চক্রবর্তী ছুটি গল্পের ফটিক, তার কাছারির বাবুর্চি কলিমুদ্দি চিরকুমার সভার কলিমুদ্দি মিঞা, পোস্টমাস্টার মহেন্দ লাল বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পোস্টমাস্টার গল্পের নায়ক।
বর্তমানে একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম করা হয়েছে কাছাড়ি বাড়িতে। রবীন্দ্রপ্রেমিদের জন্য ভ্রমণের একটি চমৎকার স্থান হতে পারে এই কাছারি বাড়ি।

কীভাবে যাবেন: কাছারি বাড়িতে যেতে হলে ঢাকা থেকে সরাসরি শাহজাদপুরের বাসে যাওয়া যায়। এছাড়া সিরাজগঞ্জ শহর থেকে কুষ্টিয়ার বাসে উঠে শাহজাদপুর মোড়ে নেমে যাওয়া যায়। বাসস্ট্যান্ড থেকে রিক্সায় ১৫ টাকা ভাড়া নিবে কাছারি বাড়ি। কাছারিবাড়ির কমপ্লেক্স রবিবার ও সরকারি ছুটির দিনগুলো পূর্ণ দিবস বন্ধ থাকে এবং সোমবার অর্ধ দিবস বন্ধ থাকে।
আরেকটি কথা কাছারি বাড়ি গেলে কাছেই শাহ মাখদুমের মাজার ঘুরে আসতে ভুলবেননা। রিক্সায় ২০ টাকা ভাড়া নিবে মাজার পর্যন্ত।


No comments:

Post a Comment